পাতা:অলৌকিক নয়, লৌকিক (দ্বিতীয় খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পত্র পত্রিকার খবরে ভূত
১০১

 অগত্যা বিজয়কে বিদায় নিতে হল, নিচে নামতে উৎসুক দর্শকরা জানতে চাইলেন, যুক্তিবাদী সমিতির এ বাড়ির ভূত তাড়াতে নামছে না কি? বিজয় জানালেন, যুক্তিবাদী সমিতির নামেই ভূতের উপদ্রব বন্ধ হওয়ার কাহিনি। দিলীপবাবুর উদ্দেশে ক্রুদ্ধ জনতার গালাগাল ও ধিক্কার শুনতে শুনতে বিজয় বিদায় নিয়েছিলেন।

নিউ জলপাইগুড়িতে ভূতের হানা

 মাসকয়েক আগের ঘটনা, নিউ জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কলোনির যুবতী রূপাকে ভূতে ধরেছে, অতিপ্রাকৃতিক যত ঘটনা ঘটে চলেছে রূপাদের বাড়িতে। মুহূর্তে খবর এতই ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল যে ঘটনাটার রহস্য অনুসন্ধানে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়িকে নামতে হয়। শোনা যায় বাল্ব, কৌটো, শিশি এবং অন্যান্য জিনিসপত্র আপনা থেকেই ছিটকে ছিটকে যেখানে সেখানে এসে পড়ছিল।

 আমাদের সমিতির সহযোগী সংস্থা শিলিগুড়ির নবোদয় বিজ্ঞান পরিষদের পক্ষে প্রলয় চৌধুরী, পঙ্কজ বসু, বিশ্বদীপ রায় মুহুরী সত্যানুসন্ধানে নেমে পড়েন। ঘটনার বিবরণ জানতে রূপার বাবা এ কে ব্যানার্জি, মা রেখা, রূপা, রূপার বন্ধু কমলেশ রায়, পাশের কোয়ার্টারের পরিমল চন্দ্র পাল এবং আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন। কথা বলেন ও.সি. রাজকুমার ঘোষের সঙ্গেও।

 ঘটনার সকলের বিবরণগুলো পরপর সাজানোতে যে চিত্রটা ভেসে উঠল সেটা হল এই—রূপাদের বাড়িতে কমলেশ ও তার বন্ধু-বান্ধবীদের হই-হুল্লোড়ে বিরক্ত পরিমলবাবু প্রতিবাদ জানিয়ে ছিলেন। সে চুরাশি সালের ঘটনা। প্রতিবাদ জানানোর পর থেকে পরিমলবাবুর কোয়ার্টারের উঠোনে বোতল, টিন ইত্যাদি পড়তে থাকে। পরিমলবাবু কাউকে হাতে-নাতে ধরতে না পারলেও এগুলোকে মানুষেরই কীর্তি অনুমান করে ৬ এপ্রিল ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ করেন। আশে-পাশের কিছু মানুষজন রূপা-কমলেশদের সন্দেহ করতে থাকেন। ব্যানার্জি পরিবার অবশ্য দৃঢ়তার সঙ্গে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ব্যাপারটা হয় তো কোনও মানুষেরই কাজ নয়।

 ভূতের উপদ্রব বন্ধ হয়। ’৮৮-র সেপ্টেম্বরের শুরুতেই পরিমলবাবুর সঙ্গে ব্যানার্জি পরিবারের সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং ভূতের উপদ্রবও শুরু হয়। ৪ সেপ্টেম্বর পরিমলবাবু পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। ভূত তার পরে পরেই উপদ্রব বন্ধ রাখে। আবার শুরু ’৮৯-এর সেপ্টেম্বর। ২৫