পাতা:অলৌকিক নয়, লৌকিক (দ্বিতীয় খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৪
অলৌকিক নয় লৌকিক ২

কলকাতার হাসপাতালে ভূত

সালটা ২০০৭, তারিখ ৮ মার্চ। কলকাতা টি.ভি.-র সঙ্গে সন্ধে নাগাদ গেলাম পাইকপাড়ার ‘ইন্দিরা মাতৃসদন ও শিশু কল্যাণ হাসপাতাল’-এ। টিভির ‘ওবি’ ভ্যান সঙ্গী। ‘লাইভ’ টেলিকাস্ট হবে।

 আমরা পৌঁছনোর পাঁচ মিনিটের মধ্যে বিশাল ভিড়। বাস, গাড়ি চলাচল বন্ধ। কিছুক্ষণের মধ্যে বিশাল পুলিশবাহিনী হাজির। হাসপাতালের ইনচার্য ডাঃ ডি বাসুকে ফোনে ডেকে আনা হল। তিনি আমার প্রশ্নের উত্তরে জানালেন, সকাল থেকে রোগী ও শিশুদের ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু বিকেল হতেই ভিড় ফাঁকা। প্রয়োজনেও কোনও রোগী ভর্তি হয় না। কারণ তাঁরা বিশ্বাস করেন এই হাসপাতালে ভূত থাকে। না আমি কোনও দিনই রাতে থাকেনি।

 —কেন থাকেননি?

 আমার প্রশ্নের উত্তরে জানালেন, রাতে একটিও রোগী থাকে না। থেকে কী করব?

 —রাতে যে কর্মীদের ডিউটি থাকে এবং তার জন্য মাইনেও পান, তাঁরাও থাকেন না?

 আমার প্রশ্নের উত্তরে জানালেন, না কেউ থাকেন না। জানালাম, এই এলাম। সন্ধে ৭টা ৩০ বাজে। ঢোকার সময় দেখলাম, কয়েকজন লোক মদ খেতে খেতে তাসের জুয়া খেলছে। এই হাসপাতাল কি অসামাজিক কাজের জায়গা? এমনটা ঘটলে তো এইসব সমাজবিরোধী লোকেদের ভয়েই রোগিনীদের সম্মান নিয়ে টানাটানি হতেই পারে। তাই নয় কি?

 উত্তর নেই।

 ফোন করলাম স্বাস্থ্য অধিকারী স্ত্রী বক্সিকে। তিনি জানালেন, এত জানতাম না। মিডিয়ার কাছ থেকে এই প্রথম শুনলাম। আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবস্থা নেব?

 বললাম, সব বেড ফাঁকা পড়ে আছে। কোনও কোনও রুমে ও কম্পাউন্ডের ভেতর মদ-জুয়ার আসর চলছে। এইগুলো বন্ধ করুন। যারা কম্পাউন্ডে অসামাজিক কাজ করছিল, স্থানীয় ছেলেরা আমাদের ঘিরে রেখেছে। পুলিশকে বলুন, ওদের অ্যারেস্ট করতে। আমি এখানে হাজির একজন সার্জেন্টের মোবাইল নম্বর দিচ্ছি। তাঁকে ফোন করুন। নিন নম্বরটা লিখুন....