পাতা:অলৌকিক নয়, লৌকিক (দ্বিতীয় খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভূতের ভর
৭৩

আমি—বেলুন লুকাতে শিখলে কী করে? তুমি তো দেখছি দারুণ ম্যাজিশিয়ান।

 অমিত—আমাদের স্কুলে সায়েন্স ক্লাব আছে। সিনিয়র স্টুডেন্টরা অলৌকিক—বাবাদের বুজরুকি ফাঁস করে দেখায় বিভিন্ন জায়গায়, নানা অনুষ্ঠানে। ওদের কাছ থেকে আমরা জুনিয়র স্টুডেন্টরাও অনেক খেলা শিখেছি।

 জল ভূতের রহস্য ফাঁস হওয়ার পরেও একটু কাজ বাকি ছিল। ছেলেটিকে সাময়িকভাবে তার মানসিক বিষণ্ণতা থেকে ফিরিয়ে এনেছিলাম। অনিতাকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলাম—স্নেহশীল মায়ের সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ার ব্যাপারে অতি উৎকণ্ঠা বা অতি আগ্রহের ফল সব সময় ভাল হয় না, যেমনটি হয়নি অমিতের ক্ষেত্রে

 সুদীপ ও অনিতার কাছে জল-ভূতের রহস্য উন্মোচন করে বুঝিয়ে ছিলাম, কেন অমিত এমনটা করল, তার কারণগুলো। স্থায়ীভাবে অমিতকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে অমিতের প্রয়োজন মায়ের সহানুভূতি, ভালবাসা। সেই সঙ্গে সুদীপ ও অনিতাকে বলেছিলাম, জল ভূতের রহস্যের কথা তাঁরা যে জেনে ফেলেছেন, এ কথা যেন অমিতকে জানতে না দেন, কারও কাছেই যেন অমিতের এই দুষ্টুমির বিষয়ে মুখ খুলে অমিতকে তীব্র সমালোচনার মুখে ঠেলে না দেন।

 অমিতের মা, বাবার অনুরোধেই ‘আজকাল’-এর পাতায় জল ভূতের রহস্য প্রকাশ করা হয়নি, কারণ পত্রিকার প্রতিবেদন অমিতের নাম গোপন করা সম্ভব ছিল না, অমিতের নাম প্রকাশ করে ওকে মানসিক চাপের মধ্যেও ফেলা ছিল একান্তই অমানবিক।

গুরুদেবের আত্মা

এবারের ঘটনার নায়িকা এক বেতার সঙ্গীত-শিল্পী। ’৮৮-র শীতের এক সন্ধ্যায় স্বামীর সঙ্গে এলেন। স্বামী একটি আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানে উঁচু পদে কাজ করেন। নাম ধরা যাক চঞ্চল আদিত্য। স্ত্রী অপর্ণা। চঞ্চল ছোট্ট-খাট্ট চেহারার, বিরল দাড়ি-গোঁফের, শান্ত-শিষ্ট মানুষ। গায়ের রঙ ফর্সা। চুল আঁচড়ানো সুবোধ বালক ধাঁচের। বয়স বছর পঞ্চাশ। যে চুলগুলো সাদা হয়ে আছে, সেগুলোতে কলপ দিলে সম্ভবত তিরিশ বলেও চালানো যায়। অপর্ণা পাঁচ ফুট চার ইঞ্চির সুঠাম চেহারার রমণীয় রমণী। দৃষ্টিতে ও চোখের কোলে