পাতা:অলৌকিক নয়, লৌকিক (দ্বিতীয় খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পত্র পত্রিকার খবরে ভূত
৯৫

 এরপর যোগাযোগ করি, ট্যাক্সি-ড্রাইভারস ইউনিয়নের সঙ্গে। সাধারণ সম্পাদক শিশির রায় জানান, তাঁরা অনেকেই ঘটনাটা শুনেছেন, কিন্তু কেউই প্রত্যক্ষদর্শী নন। অনেকে অবশ্য ঐ পথ বর্জন করে চলেছেন।

 আমার কাছে যেটা বিস্ময়কর মনে হয়েছে সেটা হল, এমন একটা বিদঘুটে মিথ্যে খবর আনন্দবাজারের মতো নামী-দামি পত্রিকা এত গুরুত্ব দিয়ে প্রথম পৃষ্ঠাতেই ছাপাল কী করে? অদ্ভুতুড়ে খবরটি দেখে বার্তা-সম্পাদক বা সম্পাদকের কারও কি একবারের জন্যেও মনে হয়নি, খবরটি সত্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজন আছে?

এক সত্যি ভূতের কাহিনি ও এক বিজ্ঞানী

 ভূত নেই নেই করে যাঁরা চেঁচাচ্ছেন, যাঁরা বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে বলছেন, “মৃত্যুর পরেই মানুষের সব শেষ”, “আত্মা মোটেই অমর নয়,” তাদের চ্যালেঞ্জ জানিয়েই একটি ভূতের “সত্যি কাহিনি” প্রকাশিত হল “পুলিশ ফাইল” নামের একটি মাসিক পত্রিকায়। পুলিশ ফাইল পত্রিকার সম্পাদক মোটেই এলে-বেলে লোক নন, দস্তুরমতো কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের অধ্যাপক অনীশ দেব। ভৌতিক ঘটনাটির নায়ক দেবেন, নায়িকা অনুরাধার ছবিও সম্পাদক প্রকাশ করেছিলেন, সেই সঙ্গে দিয়েছিলেন দেবেনের পুরো ঠিকানা।

 ঘটনাটা ছোট্ট করে জানাচ্ছি।

 দেবেন থাকেন কলকাতার কাশীপুরের ২৬ নং শ্যামল মুখার্জি লেনে। দেবেনের বাবা রামদেববাবু পুরসভার কেরানি। দেবেন বয়সে তরুণ। বিয়ে করেন ১২ জুন ১৯৮৫। স্ত্রীর অনুরাধা ভুবনেশ্বরের কাজী লেনের বাসিন্দা ছিলেন। বাবার নাম জগদেব নারায়ণ।

 বিয়ের পর দিন ১৩ জুন প্রথম ভৌতিক ঘটনাটা ঘটল। ফুলশয্যার রাতে দেবেন অনুরাধাকে একা পেয়ে অনুরাধার গলা এবং শরীরের নানা অংশে প্রচণ্ড জোরে কামড়ে রক্তাক্ত করে তুলল। সেই সঙ্গে ভয় দেখিয়ে বলল, “তুমি যতই চেষ্টা করো না কেন বাঁচতে পারবে না। আমি তোমাকে কাঁচা চিবিয়ে খাব।” আরও একটা অদ্ভুত ব্যাপার হল, দেবেন যখন এই কথাগুলো বলছিল তখন তা দেবেনের গলার স্বর ছিল না, মেয়ের কণ্ঠস্বর বেরিয়ে আসছিল।

 অনুরাধা ভয়ে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে চিৎকার করতে করতে ঘর থেকে