পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাধুসন্তদের অলৌকিক ক্ষমতা
১২১

সেজে একাধিকবার হাজির হয়েছেন সাইন্স ক্লাবের সভ্য-সভ্যারা। মেহেবুব ও তার সাঙ্গাতদের দৃষ্টি এড়িয়ে হাতের তালুতে ঢালা দুধ কোনওভাবে নিয়ে বেরিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।

 জুন মাসের মাঝামাঝি মেহেবুব বিশেষ রােগীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা চালু করলেন। বিনিময়ে নিতে লাগলেন মাত্র দশ টাকা। সেইসঙ্গে প্রচার চলতে লাগল গরুটি কামধেনু'। এই মত নাকি মেহবুবের নয়। তারকেশ্বর থেকে গরুটিকে দেখতে আসা কিছু পণ্ডিত ব্রাহ্মণই বিদায়কালে নাকি এই মত প্রকাশ করে গেছেন। মেহেবুবের কাছে।

 যুক্তিবাদী সমিতির তরফ থেকে গিয়েছিলাম মেহেবুব আলির কাছে। অবশ্যই পরিচয় গােপন রেখে। চতুর মেহেবুবের আস্থা ভাজন করতে পুরেপুরি সক্ষম হয়েছিলাম। ফলে অনেক কিছুই জেনেছিলাম। পেয়েছিলাম অলৌকিক দুধে রােগমুক্ত হওয়া মানুষদের ঠিকানা। মেহেবুবের কথায়—১৯ এপ্রিল রাতে নামাজ পরে ইফতার করে শুয়েছি। রাতে স্বপ্ন দেখলাম, ফুরফুরার দাদা পীর সাহেব বলেছেন, কাল থেকে অ্যাণ্টনীর দুধ হবে। এই দুধ যে পরম বিশ্বাসে রােগ সারার প্রার্থনা নিয়ে পরপর তিনদিন খাবে, তারই অসুখ সেরে যাবে। তবে সব অসুখ নয়। একটা মাত্র অসুখ সারার প্রার্থনা নিয়ে খেতে হবে। দুধ নসির চামচের এক চামচ খেলেই হবে।

 স্বপ্নের পর ঘুম ভেঙে গেল। স্বপ্নকে স্বপ্ন বলেই ভাবলাম। কী করে বিশ্বাস করি ২২ মাস বয়সের বকনা অ্যাণ্টনি গর্ভ না হতেই দুধ দেবে? অ্যাণ্টনি জার্সি বকনা। ভেবেছিলাম ওকে কুরবানি দেব। সকাল না হতেই কিছুটা অবিশ্বাস্য ও কিছুটা কৌতুহল নিয়ে অ্যাণ্টনির বাঁটে হাত দিলাম। অবাক কাণ্ড। অ্যাণ্টনি দেড় সেরের মতাে দুধ দিল।

 দিন দুয়েক পর থেকে সাহস করে দাদা পীর সাহেবের নির্দেশ মতাে রােগীদের দুধ বিতরণ শুরু করলাম। অবাক হয়ে দেখলাম তিনদিন দুধ খেয়ে যােবা কথা বলতে লাগল। প্যারালাইসিস রােগী উঠে বসল। সাহস পেলাম। পীর সাহেবের আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে আমার কাপড়ের দোকান বন্ধ করে মানুষের সেবায় নিজেকে লাগিয়ে দিলাম। মেহেবুব আমাকে দুধ খেতে দিয়েছিলেন। একটা শিশিতে পরম যত্নে কিছুটা দুধও দিয়ে দিয়েছিলেন। ছবি তােলায়ও কোনও আপত্তি করেননি।

 বনগাঁ সায়েন্স ক্লাব ও নজরুল ক্রীড়া চক্রের সাহায্যে আমরা আগত ভক্তদের কাছে তথ্য হাজির করে বােঝাতে চেষ্টা করেছিলাম,

কোনও গরুর হরমােনের ভারসাম্য হীনতার জন্য বাচ্চা না হলেও
কোনও গরুর পক্ষে যথেষ্ট পরিমাণে দুধ দেওয়া সম্ভব।
ল্যাকটোজেনিক হরমােন ইনজেক্ট করেও বকনার।
বাঁটে দুধ আনা সম্ভব। এমন যদি হয়, গরুটা