পাতা:অশ্বঘোষের বুদ্ধচরিত (প্রথম খণ্ড) - রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯৪৫).pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অশ্বঘোষের বুদ্ধচরিত

 সেই নগরী, প্রতিগৃহে রত্নবিমণ্ডিত বেদিকা, তোরণ ও সিংহকর্ণ দ্বারা শোভিত হইয়া, জগতে আত্মসদৃশ অপর কোনো পুরী দেখিতে না পাইয়াই যেন নিজ গৃহসমূহের মধ্যেই পরস্পরের সহিত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিত॥৫॥

 অস্তগমনকালেও কামিনীগণের কমললাঞ্ছন মুখচন্দ্রমাকে অবমাননা (ম্লান) করিতে অক্ষম হইয়া, যেন সন্তাপহেতুুই, সূর্য অবশেষে জলে আত্মবিসর্জনের জন্য সমুদ্র অভিমুখে প্রস্থান করিতেন॥৬॥

 শাক্যদিগের অর্জিত যশের সহিত লোকে চন্দ্রমার উপমা দেয়, এই ভাবিয়া সেই নগরী চঞ্চল সুন্দর পতাকাযুক্ত ধ্বজদণ্ডের দ্বারা চন্দ্রের চিহ্ন পর্যন্ত যেন মার্জন করিয়া ফেলিতে উদ্যত হইত॥৭॥

 সেই নগরী, নিজ রজতালয়ে নিপতিত চন্দ্রকর দ্বারা রাত্রিকালে কুমুদকে প্রফুল্ল করিয়াও, দিবাভাগে নিজ সুবর্ণহর্মগত সূর্যকরঞ্জালে, সরোজের শোভা বিস্তার করিত॥৮॥[]

 মহীপালগণের শীর্ষস্থলাভিষিক্ত সূর্যবংশীয় শুদ্ধোদন নামে উদার নরপতি, সেই সর্বোত্তম নগরীকে বিকশিত পদ্মের ন্যায় অলংকৃত করিয়াছিলেন॥৯॥

  1. চন্দ্র কুমুদকে প্রফুল্ল করে কিন্তু পদ্মের শোভা হরণ করে। সূর্য পদ্মের শোভা বর্ধন করে কিন্তু কুমুদকে ম্লান করে। ইহাদের কেহই কুমুদ ও পদ্ম উভয়কে প্রফুল্ল করিতে পারে না। কিন্তু সেই নগরী (কবি— বর্ণিত উপায়ে) কুমুদকে প্রফুল্ল করিয়া পদ্মের শোভা বিস্তার করিত।