পাতা:অশ্বঘোষের বুদ্ধচরিত (প্রথম খণ্ড) - রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯৪৫).pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম সর্গ

 “আমি অতীন্দ্রিয় হইয়া থাকিলে এই অবিশ্বাসী জনসমূহ আমার সহিত মিলিত হইতে পারিবে না” এই ভাবিয়া ধর্ম যেন তাঁহার সূক্ষ্ম প্রকৃতি পরিত্যাগ করিয়া (মায়াদেবীরূপে) দেহ ধারণ করিয়াছিলেন॥১৮॥

 অনন্তর তুষিত স্বর্গ হইতে চ্যুত হইয়া, ত্রিলোক উদ্ভাসিত করিতে করিতে, বোধিসত্ত্বোত্তম (সিদ্ধার্থ), স্মরণ করিবামাত্র (তৎক্ষণাৎ) নন্দাগুহামধ্যে নাগরাজের হ্যায়, তাঁহার কুক্ষিমধ্যে প্রবেশ করিলেন॥১৯॥

 হিমাদ্রির ন্যায় ধবল বৃহৎ ষড়-বিষাণযুক্ত, মদবাসিতানন দ্বিরদের রূপ ধারণ করিয়া, তিনি বহুধাধিপতি শুদ্ধোদনমহিষীর কুক্ষিমধ্যে, জগতের দুঃখদুরীকরণের জন্য, প্রবেশ করিয়াছিলেন॥২০॥

 স্বর্গ হইতে লোকপালগণ লোকৈকনাথের রক্ষার জন্য অভিগমন করিলেন। চন্দ্রকিরণ সর্বত্র সমভাবে প্রতিভাত হইলেও কৈলাসগিরিতেই বিশেষভাবে দীপ্তি পায়॥২১॥[]

 জলদাবলী যেমন বিদ্যুৎ-বিলাসকে ধারণ করে, সেইরূপ মায়াদেবীও তাঁহাকে কুক্ষিতে ধারণ করিয়া, দানাভিবর্ষণের

  1. লোকপালগণ সমস্ত লোককে সমভাবে রক্ষা করেন, তাঁহাদের কাহারও প্রতি পক্ষপাত নাই। এখানে পাছে তাঁহাদের পক্ষপাত আছে বলিয়া মনে হয়, এই আশঙ্কা করিয়া কবি বলিতেছেন, “চন্দ্রকিরণ সর্বত্র সমভাবে প্রতিভাত হইলেও কৈলাসগিরিতেই বিশেষভাবে দীপ্তি পায়।”