অশ্রু সঞ্চিত হইল, তিনি দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া, আকাশের দিকে দৃষ্টিপাত করিলেন॥৬৬॥
মহর্ষি অসিতের অক্ষি অশ্রু-প্লাবিত দেখিয়া, অপত্যস্নেহবশত (অমঙ্গল আশঙ্কায়), নরপতি কম্পিত হইয়া উঠিলেন। কৃতাঞ্জলিপুটে নতমস্তকে বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে গদগদ স্বরে, তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন॥৬৭॥
“দেবগণের দেহের সহিত যাঁহার দেহের প্রভেদ অতি অল্প, যাঁহার জন্ম জ্যোতির্ময় এবং অতি আশ্চর্য; আপনার বাক্য অনুসারে যাঁহার ভবিষ্যৎ অতি উত্তম, তাঁহাকে দেখিয়া আপনার নয়নে তাশ্রু সঞ্চিত হইতেছে কেন।॥৬৮॥
“হে ভগবন্, কুমার কি স্থিরায়ু হইবেন। নিশ্চয়ই আমার শোকের জন্য তাঁহার জন্ম হয় নাই। আমি কোনোরূপে যেঅঞ্জলিপূর্ণ জলটুকু লাভ করিয়াছি, কাল তাহা এখনি শোষণ করিতে আসিতেছেন, ইহা কখনই হইতে পারে না॥৬৯॥
“সুপ্ত হইলেও যে-পুত্রের দিকে আমার একটি আঁখি অনিমেষে চাহিয়া থাকে— আমার সেই যশের আধার কি অক্ষয় হইবে। আমার এই কুলপ্রসার কি স্থায়ী হইবে। আমি কি সুখে পরলোকে প্রয়াণ করিতে পারিব।॥৭০॥
“এই কুলকিসলয় উৎপন্ন হইয়া, অপ্রস্ফুটিত অবস্থায় কখনই পরিশুষ্ক হইবে না। হে বিভো! আমি অশান্ত হইয়াছি। আপনি সত্ত্বর উত্তর দান করুন। আত্মজের প্রতি আত্মীয়ের স্নেহ তো আপনি অবগত আছেন”॥ ৭১॥