পাতা:অশ্বঘোষের বুদ্ধচরিত (প্রথম খণ্ড) - রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯৪৫).pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
অশ্বঘোষের বুদ্ধচরিত

 নরপতিকে অমঙ্গল আশঙ্কায় উদবিগ্ন মনে করিয়া, মুনি কহিলেন:- “হে রাজন! তুমি অন্য কিছু আশঙ্কা করিয়ো না। আমি যাহা বলিয়াছি, তাহা নিঃসন্দেহে সত্য॥৭২॥

 “ইহার অন্যরূপ কিছু হইবে বলিয়া যে আমার মন চঞ্চল হইয়াছে, তাহা নহে। আমি স্বয়ং বঞ্চিত হইলাম এই ভাবিয়াই আমার মন বিকল হইয়াছে। আমার পরলোকযাত্রার দিন আগতপ্রায়। হায়, এমন সময় এই দুর্লভ পুনর্জন্মক্ষয়ের উপায়জ্ঞ পুরুষ জন্মগ্রহণ করিলেন॥৭৩॥

 “রাজ্যত্যাগী, বিষয়ে আস্থাশূন্য, তীব্র প্রযত্নের দ্বারা অধিগততত্ত্ব এই জ্ঞানময় সূর্য, মোহান্ধকার দূরীকরণের জন্য জগতে প্রজ্বলিত হইবেন॥৭৪॥

 “হায়!এই সংসার যেন দুঃখের সাগর। ব্যাধি ইহার ফেনস্বরূপ। জরা ইহার তরঙ্গ। মৃত্যু ইহার বেগ উগ্র করিতেছে। সমস্ত জগৎ এই দুঃখের সাগরে ভাসিয়া যাইতেছে। এই মহামানব তাঁহার প্রজ্ঞাতরণী বাহিয়া, এই আর্ত জগৎকে উদ্ধার করিবেন॥৭৫॥

 “ইঁহার প্রবর্তিত ধর্ম, স্রোতস্বিনী নদীর ন্যায় বহিয়া চলিবে। প্রজ্ঞা হইবে তাহার বারি। সমাধি সেই বারিকে শীতল করিবে। স্থির শীল হইবে তাহার তট। ব্রত হইবে চক্রবাক। এই উত্তমা স্রোতস্বিনী হইতে তৃষ্ণার্ত জীবলোক তৃষ্ণা নিবারণ করিবে॥৭৬॥

 “ইনি শোকক্লিষ্ট, বিষয়াবৃত সংসারকাস্তারমার্গস্থিত,