পাতা:অসাধারণ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বংশলতিকার সন্ধানে SSG -সে ও পাড়ায়। ওই তেঁতুল গাছের পাশের রাস্তা দিয়ে যানআধঘণ্টা পরে সে সাইমাকে প্রণাম করিয়া তাহার প্রদত্ত পিড়িতে বসিয়া কথাবার্ত্তা বলিতেছিল। নীরেন দেখিল তাহার সাইমার বয়স খুব বেশি নয়, মাথার চুল এখনও একগাছি পাকে নাই, রং বেশ ফস, দোহার চেহারা, এক সময়ে যে ইনি সুন্দরী ছিলেন, এখনও দেখিলে বোঝা যায় । সাইমা চোখের জল ফেলিলেন। অনেক আশীৰ্বাদ করিলেন। পাকা বেলের সরবৎ, মুগের ডাল ভিজানো ও আখের গুড় খাইতে দিলেন। সাইমাকে পাইয়া নীরেন যেন হারানো মায়ের সান্নিধ্য বহুদিন পরে অনুভব করিল। সে সাইমাকে কখনো দেখে নাই এর আগে । সাইম কিন্তু তাহাকে দেখিয়াছিলেন সে যখন দুই বৎসরের খোকা, তখন। প্রৌঢ় মহিলার বহু পুরানো দিনের শোকর্ম্মতি উথলাইয়া উঠিল আজ তাহাকে পাইযা । এমন কত লোকের নাম করিতে লাগিলেন যাহাঁদের কথা মায়ের মুখে আলিগড়ে নীরেন শুনিত বাল্যকালে-কত বাল্যস্মৃতিজাগানো নামাবলী । দেশেব ঘবের সব লোকের নাম । বঁচিয়া আছে কেউ কেউ এখনও-তবে বেশির ভাগই মাবা গিয়াছে। সইমী বলিলেন-তোর মুখে সাইয়ের মুখ যেন মাখানে রয়েচে - নীরেন হাসিয়া চুপ করিয়া রহিল। --সই বন্ড সুন্দরী ছিল। গ্রামের কাজকর্ম্মে যখন সেজোগুজে নেমতান্ন খেতে কি বিয়ে থাওষায় জল সইতে যেতো তখন লোকে দু দণ্ড চেয়ে দেখতো। এদানি রোগে শোকে আর কিছু ছিলনা চেহারার। এখান থেকে চলে যাওয়ার পরে আর কখনো দেখা হয় নি সইয়ের সঙ্গে । সে কতদিন হবে রে নীরু ? নীরেন মনে মনে হিসাব করিয়া বলিল-ত প্রায় তেইশ চব্বিশ বছর হোল । --সই মারা গিয়েচে কতদিন ? --বেশি দিন না, বল্লাম যে পছর পাচেক হবে । --তাহোলে সই বেঁচে থাকলে এই পয়তাল্লিশ বছর বয়েস হোত