পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯০
আখ্যানমঞ্জরী

আত্মরক্ষার উপায় দেখ, নতুবা দুই জনেই ধৃত ও পুনরায় তীরে নীত হইব।

 এই বলিযা রজর্, এণ্টোনিয়ের কটিবন্ধ ছাড়িয়া দিল, এবং তৎক্ষণাৎ জলমগ্ন হইল। অকৃত্রিম প্রণয়ের কি অনির্ব্বচনীয় প্রভাব। এণ্টোনিয়, রজরকে কটিবন্ধপবিত্যাগপূর্ব্বক জলমগ্ন হইতে দেখিয়া, তাহাকে তুলিবার নিমিত্ত তৎক্ষণাৎ জলে প্রবিষ্ট হইল। কিয়ৎক্ষণ, উভয়েই অলক্ষিত হইয়া রহিল।

 নৌকার লোকেরা, উহাদিগকে দেখিতে না পাইয়া, কোন দিকে যাইতে হইবে স্থির করিতে না পারিয়া, কিঞ্চিৎ কাল স্থির হইয়া রহিল। জাহাজের লোকেরাও, কৌতূহলাক্রান্তচিত্তে ও অবিচলিতনয়নে, এই অদ্ভুত ব্যাপারের অবলোকন করিতেছিল। তাহারা, দুই জনকে জলমগ্ন হইতে দেখিয়া, উহাদের উদ্দেশের নিমিত্ত একখান বোট খুলিয়া দিল। কিয়ৎক্ষণ চারিদিক নিরীক্ষণ করিয়া বোটের লোকেরা দেখিতে পাইল, এণ্টোনিয়, এক হস্তে রজরকে ধরিয়া আছে, অপর হস্ত দ্বারা বোটের নিকট আসিবার নিমিত্ত প্রাণপণে চেষ্টা করিতেছে। নাবিকেরা তদ্দর্শনে কারুণ্যরসে পরিপূর্ণ হইয়া, যৎপরোনাস্তি বলপূর্ব্বক ক্ষেপণী চালিত করিয়া তাহাদের নিকটে উপস্থিত হইল, এবং তৎক্ষণাৎ উভয়কে বোটে উঠাইয়া লইল।

 এই সময়ে, এণ্টোনিয় এরূপ নিবীর্য্য হইয়া পড়িয়াছিল যে, আর এক মুহূর্ত বিলম্ব হইলে, উভয়ে নিঃসন্দেহ জলমগ্ন হইত। তোমরা আমার বন্ধুর প্রাণরক্ষা কর, এইমাত্র বলিয়া সে অচেতন