পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পিতৃভক্তি ও পতিপরায়ণতা।

আন্তরিক কৃতজ্ঞতাসহকারে তদীয় দঅয়া ও সৌজন্যের উল্লেখ পূর্বক, প্রভূত সাধুবাদ প্রদান করিয়া, অশ্রুপূর্ণনয়নে তাহাদের নিকট বিদায় লইল। এই ঘটনা দ্বারা দুই বন্ধুর চিরবর্দ্ধিত অকৃত্রিম প্রণয় সহস্র গুণে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হইল। অতঃপর উভয়কে পৃথক্ পৃথক্ স্থানে যাইতে হইবে, সুতরাং পরস্পরের বিচ্ছেদ অপরিহার্য্য হইয়া উঠিল। কিরূপে এরূপ বন্ধুর বিচ্ছেদযাতনা সহ্য করিব, এই ভাবনায় উভয়ে নিতান্ত অস্থির হইল। অবশেষে বাষ্পাকুললোচনে গদগদবচনে প্রণয়রসপূর্ণ সম্ভাষণ ও বারংবার গাঢ় আলিঙ্গন করিযা, স্ব স্ব জম্মভূমি, পরিবার ও আত্মীয়বর্গেব উদ্দেশে প্রস্থান করিল।

পিতৃভক্তি ও পতিপরায়ণতা

পূর্ব্বকালে গ্রীস্ দেশের অন্তঃপাতী স্পার্টা নগরে লিয়নিডাস নামে রাজা ছিলেন। তিনি ঐ নগরের ক্লিযম্ব্রোটস্ নামক এক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির সহিত খিলোনিস্ নাম্নী সর্ব্বগুণসম্পন্ন স্বীয় তনয়ার বিবাহ দেন। খিলোনিস্, পিতা ও পতি উভয়ের প্রতি এরূপ ভক্তিমতী ও স্নেহশালিনী ছিলেন যে, আবশ্যক হইলে, তাঁহাদের জন্য অকাতরে প্রাণত্যাগ করিতে পারিতেন, এবং তাঁরাও উভযে, তদীয় প্রশংসনীয় গুণগ্রাম দর্শনে সাতিশয় প্রীত ছিলেন, এবং তাঁহাকে আপন আপন প্রাণ অপেক্ষা অধিক ভাল বাসিতেন।