পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পিতৃভক্তি ও পতিপরায়ণতা।
৯৭

শ্রবণে, অধোবদনে মৌনাবলম্বন করিয়া রহিলেন, উত্তরপ্রদান করিতে পারিলেন না।

 অনন্তর লিয়নিডাস, স্বীয় তনয়াকে সম্বোধন ও সস্নেহ সম্ভাষণ করিয়া বলিলেন, বৎসে, তুমি আমার আবাসে চল, এ নরাধমের নিমিত্ত শোকাকুল হইয়া বিলাপ, পরিতাপ ও ক্লেশভোগ করিতেছ কেন? তখন খিলোনিস্ বলিলেন, তাত, আপনি আমায় যে শোকে আকুল দেখিতেছেন, আমার স্বামীর দুরবস্থাই তাহাব আদিকারণ নহে। ইতঃপূর্ব্বে আপনার যে বিপদ ঘটিয়াছিল, সেই অবধি উহার সূত্রপাত হইযাছে, এবং সেই অবধি এ পর্য্যন্ত আমার সহচর হইয়া রহিয়াছে। আপনি বিপক্ষ জয় করিয়া, পুনরায় বাজপদে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছেন, ইহা আমার পক্ষে মহোৎসবের এক প্রধান কারণ বটে, কিন্তু আপনি আমায় যাহার হস্তে সমর্পিত কবিয়াছেন, এবং যাঁহাব সহচরী হইয়া আমায় যাবজ্জীবন কালহরণ কবিতে হইবে, যখন সে ব্যক্তি আপনার কোপদৃষ্টিতে পতিত হইয়াছেন, এবং অবশেষে তাঁহার কি অবস্থা ঘটিবে তাহার স্থিরতা নাই, তখন আমি কিরূপে উৎসবে কালহরণ করিতে পারি? যদি আমার প্রতি আপনার স্নেহ থাকে, এবং আমারে চিরদুঃখিনী করা অভিপ্রেত না হয়, কৃপা করিয়া উঁহার অপরাধ মার্জ্জনা করুন।

 কন্যার এই প্রার্থনা শুনিয়া, লিয়নিডাস বলিলেন, বৎসে, আমি তোমায় আপন প্রাণ অপেক্ষা অধিক ভালবাসি, এবং তোমার অনুরোধে সকল কর্ম্ম করিতে পারি। কিন্তু, এই