পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আখ্যানমঞ্জরী।

দুববস্থা দেখিয়া, তাহার অত্যন্ত দয়া উপস্থিত হইল, কিন্তু যাহাতে তাহাদের যথার্থ উপকার হয়, এরূপ অর্থ তৎকালে তাহার হস্তে ছিল না। উপায়ান্তর না দেখিয়া, অবশেষে, বাসন বিক্রয় করিয়া, তিনি তাহাদেব আনুকূল্য করিলেন। তাহার এই রীতি ছিল, সঙ্গে কিছু না লইয়া, বাটী হইতে বহিগত হইতেন না, কারণ, দীন দুঃখী তাহার সম্মুখে উপস্থিত হইলে, যদি কিছু দিতে না পারিতেন, তাহা হইলে, তাহার অত্যন্ত ক্লেশবোধ হইত।

 তিনি, কেবল ধন দ্বারা সাহায্য করিয়া, ক্ষান্ত থাকিতেন না,অবসরকালে, গৃহে বসিযা, স্বহস্তে নানাবিধ পবিচ্ছদ প্রস্তুত করিয়া রাখিতেন, এবং যখন যাহাদের যেরূপ পরিচ্ছদের অপ্রতুল দেখিতেন, তাহাদিগকে সেইরূপ দিতেন। তিনি অন্যের বিপদে বিপদ জ্ঞান করিতেন, অন্যের শোকে শোক-কুল হইতেন, অন্যকে বোদন কবিতে দেখিলে, অশ্রুপাত না করিয়া থাকিতে পারিতেন না,পীড়িত বা বিপদাপন্ন ব্যক্তি-দিগের সর্বদা তত্ত্বাবধান করিতেন, এবং যে বিষয়ে তাহাদের অপ্রতুল দেখিতেন, নিজ ব্যয়ে তাহার সমাধা করিয়া দিতেন।

 পথিমধ্যে যদি তিনি অপরিচিত বালক দেখিতে পাইতেন, আর যদি, তাহার আকার দেখিলে, সুবোধ ও বুদ্ধিমান্ বলিয়া বোধ হইত, তৎক্ষণাৎ তাহার বিষয়ে সবিশেষ অনুসন্ধান করিতেন, যদি জানিতে পারিতেন, পিতা মাতার অসঙ্গতি-প্রযুক্ত তাহার বিদ্যাশিক্ষা হইতেছে না, অবিলম্বে তাহাকে