পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মহানুভবতা।
১১৩

হইয়াছিলেন। এক্ষণে সেই যুবক সহসা তাঁহাদের সম্মুখে উপস্থিত হইলে, তাঁহারা চমৎকৃত ও আহ্লাদসাগরে মগ্ন হইলেন, এবং উভয়েই এককালে স্নেহভরে গাঢ় আলিঙ্গন করিয়া, প্রভূত আনন্দাশ্রু বিসর্জ্জন করিতে লাগিলেন। তিনজনেই কিয়ৎক্ষণ জড়প্রায় হইয়া রহিলেন, কাহারও মুখ হইতে বাক্যনিঃসরণ হইল না। অনন্তর, এডর্ণো ও তাঁহার সহধর্ম্মিণী জিজ্ঞাসা করিলেন, বৎস, তুমি এত দিন কিরূপে কোথায় ছিলে, বল। তখন সেই যুবক, যেরূপে অবরুদ্ধ ও দাসত্বশৃঙ্খলে বন্ধ হয়, তাহার সবিস্তর বর্ণন করিলে, এডর্ণো বাষ্পপূর্ণনয়নে বলিলেন, কোন্ মহানুভাব তোমায দাসত্বশৃঙ্খল হইতে মুক্ত করিয়া, আমাদিগকে জন্মের মত কিনিয়া রাখিলেন, বল। সে বলিল, এই পত্রে দৃষ্টিপাত করিলে, সকল অবগত হইতে পারিবেন।

 এডর্ণো, ব্যস্ত হইয়া সেই পত্রের উদ্ঘাটন করিলেন। পত্রের মর্ম্ম এই, আপনি যে পাপিষ্ঠ নীচের সন্তানকে, যৎপরোনাস্তি গর্ব্বিতবাক্যে ভর্ৎসনা কুরিয়া, সর্বস্ব হরণপূর্ব্বক নির্ব্বাসিত করিয়াছিলেন, সেই নরাধম আপনকার একমাত্র পুত্রকে দাসত্বশৃঙ্খল হইতে মুক্ত করিয়াছে। পত্র পাঠ করিয়া, এডর্ণো, পূর্ব্বকৃত নিজ নৃশংস আচরণ ও য়ুবর্টোর অসাধারণ দয়া ও সৌজন্য প্রদর্শন, এ উভয়ের তুলনা করিয়া যৎপরোনাস্তি ক্ষুব্ধ ও লজ্জায় অধোবদন হইলেন। এই সময়ে, তাঁহার পুত্র ভক্তিরসে পরিপূর্ণ হইযা, য়ুবর্টোর স্নেহ, দয়া ও সৌজন্যের সবিস্তর বর্ণন করিতে লাগিল। এ ঋণের পরিশোধ নাই বুঝিতে পারিয়া,