পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যথার্থ বদান্যতা

উপযুক্ত বিদ্যালয়ে নিযুক্ত করিয়া দিতেন, এবং স্বয়ং সমস্ত ব্যয়ের নির্ব্বাহ করিতেন। এইরূপে তিনি অনেক দীন বালকের বিদ্যাশিক্ষার উপায় করিয়া দিয়াছিলেন। তিনি, কখনও কখনও, স্বয়ং পরিশ্রম করিয়া, তাহাদিগকে ধর্ম্ম ও নীতি বিষয়ে শিক্ষা দিতেন। যখন তিনি কোনও বালককে তাহার অভিলাষানুরূপ ফললাভ করিতে দেখিতেন, আমার যত্ন ও অর্থব্যয় সার্থক হইল ভবিয়া আহ্লাদে পুলকিত হইতেন, তাহার বিপরীত দেখিলে, তাহার শোকের ও ক্ষোভের সীমা থাকিত না।

 তিনি যে কেবল নিতান্ত নিরুপায় লোকদিগকে সাহায্য কবিতেন এরূপ নহে। অপেক্ষাকৃত ভাল অবস্থার লোকেরাও,কষ্টে পড়িলে, তাঁহার নিকট যথেষ্ট আনুকূল্য প্রাপ্ত হইতেন। তিনি বলিতেন, অসঙ্গতি বা অল্প সঙ্গতি প্রযুক্ত, লোকের যে ক্লেশ ও দুর্ভাবনা ঘটে, তাহার নিবারণ করিতে পারিলেই, মানব জাতির যথার্থ উপকার করা হয়। তদনুসারে, যে সকল লোক নিতান্ত নিঃস্ব বা দুরবস্থা গ্রস্ত নহেন, তিনি, তাদৃশ ব্যক্তিদিগেও কষ্ট দেখিলে, বিলক্ষণ সাহায্য করিতেন।

 এই দয়াশীল স্ত্রীলোকের আয় অধিক ছিল না, এজন্য সকলেই, তাহার তাদৃশ দান দেখিয়া, আশ্চর্য্য জ্ঞান করিতেন, তিনি, কিরূপে এই সমস্ত ব্যয়ের নির্বাহ করেন, কিছুই বুঝিতে পারিতেন না।

 তিনি অত্যন্ত অমায়িক, নিতান্ত সরলস্বভাব, ও সর্ব্বথা অহমিকাশূন্য ছিলেন, সর্ব্বদা, সর্ব্ববিধ লোকে সহিত, সদয়