পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দয়ালুতা ও ন্যায়পরতা।
১২৩

লইয়া যাও, কোনও খানে বিলম্ব করিও না। বালক, মুদ্রালাভে প্রফুল্ল হইয়া, চিকিৎসক আনিবার নিমিত্ত দ্রুতবেগে প্রস্থান করিল।

 এদিকে, সম্রাট অন্বেষণ করিতে করিতে, সেই বালকের আলয়ে উপস্থিত হইলেন, এবং দর্শনমাত্র বুঝিতে পারিলেন, বালক যেরূপ বর্ণন কবিয়াছিল, তাহাদের দুরবস্থা তদপেক্ষা অনেক অধিক, দেখিলেন, তাহার জননী শয্যাগত আছে, আর, একটা শিশুসন্তান নিতান্ত অশান্ত হইয়া তাহার পার্শ্বে রোদন ও উৎপাত করিতেছে। তিনি তাহার নিকটবর্ত্তী হইয়া, চিকিৎসাব্যবসায়ী বলিয়া আপন পরিচয় দিলেন, এবং নিরতিশয় সদয়ভাবে, মৃদুবচনে তাহার পীড়ার বিষয়ে সবিশেষ সমস্ত জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন।

 তদীয় সদয় ভাব অবলোকন ও কোমল সম্ভাষণ শ্রবণ করিয়া, সেই স্ত্রীলোক বলিল, মহাশয, কযেক দিবস অবধি আমার অতিশয় পীড়া হইয়াছে বটে, কিন্তু আমি পীড়া অপেক্ষা, দুরবস্থায় অধিক অভিভূত হইযাছি, আমার দুর্ভাগ্যের বিষয়ে আপনার নিকটে কি পরিচয় দিব। অল্প দিন হইল, স্বামীর মৃত্যু হইয়াছে, যাহা কিছু সংস্থান ছিল, অমুক বণিক্ দেউলিয়া হওযাতে, সমস্ত লোপ পাইয়াছে। আমার দুটি সন্তান, দুটিই শিশু, উহাদের প্রতিপালনের কোনও উপায় নাই। বিশেষতঃ, আমার উৎকট রোগ জন্মিয়াছে, অর্থাভাবে চিকিৎসা হইতেছে না, সুতরাং ত্বরায় আমার প্রাণবিয়োগ হইবে, তখন এই