পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৪
আখ্যানমঞ্জরী।

দুই হতভাগ্যের কি দশা ঘটিবে, সেই ভাবনায় আমি অতিশয় অভিভূত হইয়াছি। বড় পুত্রটি অতিশয় মাতৃবৎসল, সে আমার চিকিৎসার নিমিত্ত ভিক্ষা করিতে গিয়াছে।

 এই অনাথ পরিবারের দুরবস্থা শ্রবণ করিয়া, সম্রাট সাতিশয় শোকাকুল হইলেন, এবং বাষ্পবারিপরিপূরিত নয়নে বলিলেন, তুমি উদ্বিগ্ন হইও না, তোমার এ দুরবস্থা অধিক দিন থাকিবে না। ত্বরায় তোমার রোগশান্তি ও দুঃখশান্তি হইবে, তাহার সন্দেহ নাই। এক্ষণে তুমি আমায় একখণ্ড কাগজ দাও, তোমাব অবস্থানুরূপ ঔষধের ব্যবস্থা লিখিয়া দিতেছি। অন্য কাগজ ছিল না, এজন্য সেই স্ত্রীলোক, জ্যেষ্ঠ পুত্রের পড়িবার পুস্তকের প্রান্তভাগে যে কাগজ ছিল, তাহাই ছিন্ন করিয়া তাঁহার হস্তে দিল। তিনি, লিখন সমাপ্ত করিয়া টেবিলের উপর রাখিযা দিলেন, এবং আমি যে ব্যবস্থা করিলাম, উহাতে তুমি সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যলাভ করিবে, এই বলিয়া প্রস্থান করিলেন।

 সম্রাট বহির্গত হইবার অব্যবহিত পরক্ষণেই, সেই দুঃখিনীর জ্যেষ্ঠ পুত্র, চিকিৎসক সঙ্গে লইয়া গৃহপ্রবেশ করিল, এবং আহ্লাদে অধীর হইয়া জননীকে সম্ভাষণ করিয়া বলিতে লাগিল, মা, তুমি আর ভাবনা করিও না, আমি টাকা পাইয়াছি ও চিকিৎসক আনিয়াছি। পুত্রের আহ্লাদ দর্শনে, তাহার নয়নদ্বয় অশ্রুপূর্ণ হইয়া আসিল। সে, পুত্রকে পার্শ্বে বসাইয়া, তাহার মুখচুম্বন করিল, এবং বলিল, বৎস, তোমার যত্ন ও আগ্রহ