পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাতুরির প্রতিফল।
২১

ঐ ব্যক্তি, বারুদ দিয়া বিনিময়লব্ধ দ্রব্যের বিক্রয় দ্বারা বিলক্ষণ লাভ করিব, এই প্রত্যাশায়, ব্যয় ও পরিশ্রম স্বীকার করিয়া সেইস্থানে গিয়াছিলেন। এক্ষণে, সম্ভাবিত লাভবিষয়ে হতাশ হইয়া, তিনি এই বিবেচনা করিতে লাগিলেন, কি উপায়ে বারুদগ্রহণে ইহাদের প্রবৃত্তি জন্মাইব। অবশেষে, তিনি এক উপায় উদ্ভাবিত করিলেন, এবং, তত্রত্য লোকদিগকে সমবেত করিয়া, কথাপ্রসঙ্গে বলিলেন, তোমরা বারুদের ব্যবহার করিয়া থাক, কিন্তু বারুদ কি পদার্থ, তাহার কিছুমাত্র জান না, শুনিলে চমৎকৃত হইবে। উহা আমাদের দেশের শস্যবিশেষ, বৎসরের অমুক সময়ে ভূমিতে বপন করিলে, অন্যান্য বীজের ন্যায়, যথাকালে ফলপ্রদান করে।

 এই কথা শুনিয়া, সমবেত লোকসকল চমৎকৃত হইল, এবং একবার শস্য জন্মাইতে পারিলে, আমাদের আর য়ুরোপীয়দের নিকট হইতে ক্রয় করিবার আবশ্যকতা থাকিবে না, এই বিবেচনা করিয়া, বহুবিধ দ্রব্যের বিনিময় দ্বারা, তাঁহার নিকট হইতে সমস্ত বারুদ লইল, এবং নির্দ্দিষ্ট সময় উপস্থিত হইলে, যত্নপূর্ব্বক, ক্ষেত্রে তৎসমুদয়ের বপন করিতে লাগিল। য়ুরোপীয় বণিক্‌, এইরূপ চাতুরী করিয়া স্বদেশে প্রতিগমনপূর্ব্বক বিনিময়লব্ধ দ্রব্যসমূহের বিক্রয় দ্বারা যথেষ্ট লাভ করিলেন।

 মিশৌরীয় লোকেরা, ক্ষেত্রে বারুদের বপন করিয়া ভূরি পরিমাণে ফললাভ প্রত্যাশায় অশেষবিধ যত্ন করিতে আরম্ভ করিল, এবং চারা জন্মিলে, পাছে বন্য জন্তুতে নষ্ট করিয়া