পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
আখ্যানমঞ্জরী।

 বণিক্, অধিপতির এই বাক্যের অভিপ্রায় বুঝিতে পারিয়া বলিলেন, আমাদের দেশে বারুদের বপন করিলে শস্য জন্মিয়া থাকে, কিন্তু এখানকার ভূমি তাদৃশ শস্যের উৎপাদনের উপযুক্ত নহে, সুতরাং আপনকার প্রজারা যে বারুদের বপন করিযাছে, তাহাতে শস্য জন্মিবার সম্ভাবনা নাই। আপনি অনুগ্রহ করিয়া, আমার প্রাপ্যদানের আদেশ প্রদান করুন। যে ব্যক্তি এদেশে বারুদ-বপনের পরামর্শ দিয়াছিল, সে ভদ্রলোক নহে, সে আপনকার প্রজাদের সহিত চাতুরী করিয়া গিয়াছে। আমি নিরপরাধ, অন্যের অপরাধে, আমার দণ্ড করা বিধেয় নহে।

 এই কথা শুনিয়া অধিপতি কিঞ্চিৎ কুপিত হইয়া, এইমাত্র উত্তর দিলেন, যদি তুমি আপন মঙ্গল চাও, অবিলম্বে আমার অধিকার হইতে চলিয়া যাও। ফরাসি বণিক, বিষন্ন হইয়া, এই ভাবিতে ভাবিতে প্রস্থান করিলেন, সেবার চাতুরীতে যত লাভ হইয়াছিল, এবার অন্ততঃ তাহার চতুর্গুণ ক্ষতি হইল, এবং চিরকালের জন্য এরূপ এক লাভের পথ রুদ্ধ হইযা গেল। যাহা হউক, আমরা সভ্য, অসভ্য জাতির নিকট বিলক্ষণ নীতিশিক্ষা পাইলাম।