পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
আখ্যানমঞ্জরী

 এইরূপ দণ্ড ব্যবস্থা হইলে, বিদবমন তদনুযায়ী কার্য্যকরণের উপযোগী স্থানে নীত হইলেন। রাজপুরুষেরা নির্দিষ্ট স্তম্ভে তাঁহার হস্তবন্ধন করিল। যে ব্যক্তির উপর কোড়া মারিবার ভার ছিল, সে অপরাধীর নিকট কিঞ্চিৎ পাইলে প্রহারের সংখ্যা ও ঔৎকট্য উভয়েরই অনেক লাঘব করিত। কিন্তু বিদবমন্ উৎকোচদানে অসমর্থ বা অসম্মত হওযাতে, সে সাতিশয় অসন্তুষ্ট হইয়া, বিলক্ষণ বলপূর্ব্বক প্রহার করিতে লাগিল। বিদবমন্ যাতনায় অস্থির হইয়া আর্তনাদ করিলে, সে, অরে দুরাত্মন্! অসন্তোষ প্রদর্শন করিতেছ, এই বলিয়া পূর্ব্বাপেক্ষা অধিকতর বলসহকারে প্রহার করিতে আরম্ভ করিল। বিদবমন, নিতান্ত কাতর হইয়া, কিয়ৎক্ষণ ক্ষান্ত থাকিতে অনুরোধ করিলে, সে পূর্ব্ববৎ, অরে দুরাত্মন্! অসন্তোষ প্রদর্শন করিতেছ, এই বলি উপর্য্যুপরি প্রহার করিতে আরম্ভ করিল।

 এইরূপ যাতনাভোগ ও অবমাননালাভ কবিয়া, বিদবমন বৈরসাধনে কৃতসঙ্কল্প হইলেন, এবং শপথ পূর্ব্বক প্রতিজ্ঞা করিলেন, যেরূপে পারি, এই অত্যাচারের সমুচিত প্রতিফল প্রদান করিব। তিনি অনতিচির সময়ের মধ্যেই, কি প্রধান, কি সামান্য, কি ধনী, কি দরিদ্র, কি উদাসীন, কি রাজপুরুষ সর্ব্ববিধ লোকের নিকট বিশিষ্টরূপ পরিচিত ও প্রতিপন্ন হইলেন এবং সর্ব্বত্র অব্যাহতগতি ও একজন গণনীয় ব্যক্তি হইয়া উঠিলেন।

 যে ব্যক্তি কোড়াপ্রহার করিয়াছিল, তাহাক্ষে সমুচিত শাস্তি-