পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পতিব্রতা কামিনী।
৩৭

রাজব্যয়ে আহার পাইয়া থাকে, কিন্তু অল্প দিনেব মধ্যেই, এরূপ উৎকট অগ্নিমান্দ্য ঘটে যে, কিছুমাত্র আহার করিতে পারে না, এবং শরীরের সন্ধিস্থল সকল এরূপ সঙ্কুচিত হইয়া যায় যে, সচরাচর প্রায় দুই বৎসরের অধিক বাঁচে না।

 এই হৃদয়বিদারণ নিদারুণ ব্যাপার দর্শনে, আমার অন্তঃকরণে অতি বিষম শোক উপস্থিত হইল। আমি, আক্ষেপ করিয়া, মনে মনে বলিতে লাগিলাম, মনুষ্যের ন্যায় নির্দ্দয় ও নির্বিবেক জন্তু ভূমণ্ডলে আর নাই, দুর্ভর অর্থলালসার বশীভূত হইয়া, দুর্বলদিগের উপর কি ভয়ানক অত্যাচার করিয়া থাকে। এই সময়ে, পশ্চাদ্ভাগ হইতে কোনও ব্যক্তি, আমার নাম গ্রহণ ও সপ্রণয় সম্ভাষণ করিয়া, জিজ্ঞাসা করিলেন, ভ্রাতঃ। তুমি কেমন আছ। সেখানে, আমায় এরূপে সম্ভাষণ করেন, ঈদৃশ ব্যক্তি কেহ ছিলেন না, সুতরাং, আমি চকিত হইয়া মুখ ফিরাইলাম, দেখিলাম, তথাকার এক কর্ম্মকর আমার নিকট আসিতেছেন। তিনি অবিলম্বে আমার সম্মুখবর্তী হইয়া বলিলেন, কি হে, আমায় চিনিতে পারিতেছেন না? কিয়ৎক্ষণ অনিমিষ-নয়নে নিরীক্ষণ করিয়া আমি ঐ ব্যক্তিকে চিনিতে পারিলাম, দেখিলাম, আমার বহু কালের বন্ধু কৌণ্ট আল্‌বার্ট সম্ভাষণ করিতেছেন। তোমার অবশ্যই স্মরণ হইবে, তিনি বিয়েনার রাজসভার একজন প্রসিদ্ধ পারিষদ, সর্ব্বদা প্রফুল্লচিত্ত, সর্ব্বলোকের হৃদয়রঞ্জন, এবং স্ত্রী পুরুষ উভয় জাতির আদর ও প্রশংসার আস্পদ ছিলেন। আমি, অনেক বার, তোমার মুখে তাঁহার প্রশংসা শুনিয়াছি, তুমি