পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
আখ্যানমঞ্জরী।

বলিতে, তিনি ইদানীন্তন কালের অলঙ্কারস্বরূপ, দয়া ও সৌজন্যের অদ্বিতীয় আকরস্বরূপ, স্বীয় প্রভূত সম্পত্তি কেবল দীনের দুঃখবিমোচনে নিয়োজিত রাখিয়াছেন।

 তাঁহার ঈদৃশ অসম্ভাবিত দুরবস্থা দর্শনে, আমি, নিতান্ত শোকাক্রান্ত ও একান্ত হতবুদ্ধি হইযা, দণ্ডায়মান রহিলাম, আমার মুখ হইতে বাক্যনিঃসরণ হইল না, নয়ন হইতে বাষ্পবারি বিগলিত হইতে লাগিল। কিয়ৎক্ষণ পরে, শোকসংবরণ করিয়া, তাঁহার ঈদৃশ দশা ঘটিবার কারণ জিজ্ঞাসা করিলাম। তিনি বলিলেন, কিছুদিন হইল, কোনও কাবণে, এক সেনাপতির সহিত আমার বিবাদ উপস্থিত হয়, অপমানবোধ হওয়াতে সম্রাটের আদেশ অমান্য করিয়া, তাহার সহিত দ্বন্দ্বযুদ্ধে প্রবৃত্ত হই, এবং তাহার প্রাণসংহার করিয়াছি স্থির করিয়া, পলাইয়া, ইষ্ট্রিয়ার জঙ্গলে লুকাইয়া থাকি। রাজপুরুষেরা অনুসন্ধান করিয়া, আমাকে অবরুদ্ধ কবে। ঐ স্থানে কতকগুলি দুর্দ্দান্ত দস্যু বাস করিত। তাহারা, রাজপুরুষদিগের হস্ত হইতে উদ্ধার করিয়া, আমায় আশ্রয় দেয়। তাহাদের সহবাসে নয় মাস অতিবাহিত করি। এই দস্যুরা সন্নিহিত জনপদে অত্যন্ত দৌরাত্ম্য করিত। তাহাদের দমনের নিমিত্ত, একদল সৈন্য প্রেরিত হয়। দস্যুদলে ও সৈন্যদলে ঘোরতর সংগ্রাম হইতে লাগিল। অবশেষে, দস্যুদলের অধিকাংশ নিধনপ্রাপ্ত হইল। হতাবশিষ্ট দস্যুদিগের সহিত ধৃত ও প্রাণদণ্ডার্থে রাজধানীতে নীত হইলাম। তথায় উপস্থিত হইলে, সকলে আমায় চিনিতে পারিল। বন্ধুবর্গের