পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বপ্নসঞ্চরণ।
৪৫

ন্তরে প্রেরিত হইয়াছিল, সুতরাং, তাঁহার অভিপ্রায় সম্পন্ন হইয়া উঠিল না। এজন্য, তিনি ক্রোধে অন্ধ হইলেন, এবং রিক্তহস্তে প্রতিনিবৃত্ত হইতে অনিচ্ছু হইয়া, সেই গৃহস্থিত কতিপয় পরিচ্ছদ লইলেন, এবং সর্ব্বতঃ সশঙ্ক দৃষ্টিপাত করিতে করিতে, স্বীয় গৃহে প্রবেশ পূর্ব্বক সেই সমস্ত অপহৃত বস্তু শয্যাতলে লুকাইয়া রাখিয়া, পুনরায় শয়ন করিলেন। যে সকল ব্যক্তি তাঁহার এই কুৎসিত কার্য্য দেখিতেছিলেন, তাঁহারা, তিনি পরদিন প্রাতঃকালে কিরূপ আচরণ করেন, ইহা জানিবার নিমিত্ত নিতান্ত উৎসুকচিত্তে রজনীযাপন করিলেন।

 রাত্রি প্রভাত হইলে, সাইরিলোর নিদ্রাভঙ্গ হইল। তিনি, শয্যার মধ্যস্থল সাতিশয় উন্নত দেখিয়া, বিস্ময়াপন্ন হইলেন, এবং কি কারণে সেরূপ হইয়াছে, তাহার কারণানুসন্ধানে প্রবৃত্ত হইয়া, কতিপয় পরিচ্ছদ তথায় স্থাপিত দেখিয়া, পূর্ব্বাপেক্ষা অধিকতর বিস্ময়াপন্ন হইলেন। অনন্তর, কিছুই নির্ণয় করিতে না পারিয়া, তিনি, আকুলচিত্তে, ধর্ম্মভ্রাতাদিগের নিকট সবিশেষ সমস্ত নির্দ্দিষ্ট করিয়া বলিলেন, এই সমস্ত পরিচ্ছদ কিরূপে আমার শয্যাতলে নিহিত হইল, কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না। তাঁহারা বলিলেন, তুমি স্বয়ং এই কাণ্ড করিয়াছ। তিনি শুনিয়া কি পর্য্যন্ত শোকাকুল ও অনুতাপানলে দগ্ধ হইলেন, তাহা বলিতে পারা যায় না।

 এক সম্পত্তিশালিনী ধর্ম্মপরায়ণা নারী এই ধর্ম্মাশ্রমের যথেষ্ট আনুকূল্য করিতেন। তিনি মৃত্যুকালে এই প্রার্থনা ও এই