পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সৌভ্রাত্র।
৫৭

সামগ্রী দ্বারা অধিক দিন সকলের প্রাণধারণ অসম্ভব। অতএব লাটরি করিয়া আপাততঃ সমুদয়ের চতুর্থ ভাগ লোককে সমুদ্রে প্রক্ষিপ্ত করা যাউক, তাহা হইলে, তদ্বারা অপেক্ষাকৃত অধিক দিন চলিতে পারিবে।

 এই প্রস্তাবে সকলে সম্মতিপ্রদৰ্শন করিলেন। পিনেসে সমুদয়ে উনিশ ব্যক্তি ছিলেন, তন্মধ্যে এক ব্যক্তি পাদরি, আর এক ব্যক্তি সূত্রধর। প্রথম ব্যক্তি, অন্তিম সময়ে ধর্ম্মবিষয়ক উপদেশ দিবেন, এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি, আবশ্যক হইলে পিনেসের মেরামত করিতে পারিবেন, এই বিবেচনায় সকলে তাঁহাদের উভয়কে ছাড়িয়া, লাটরি করিতে সম্মত হইলেন। আর নূতন কাপ্তেন বয়সে প্রাচীন, বিশেষতঃ তিনি না থাকিলে, পিনেস্ চালান কঠিন হইয়া উঠিবে, এজন্য সকলে তাঁহাকেও ছাড়িয়া দিলেন। তিনি, অনেকক্ষণ পর্যন্ত এই বিষয়ে সম্মত হয়েন নাই, পরিশেষে, সকলের সবিশেষ অনুরোধে তাঁহাকে সম্মত হইতে হইল।

 এইরূপে তিন জনকে ছাড়িয়া দিয়া, অবশিষ্ট ষোল জনের মধ্যে লাটরি হইল। যে চারিজনকে অর্ণবপ্রবাহে প্রক্ষিপ্ত করা অবধারিত হইল, তন্মধ্যে তিন জন তৎকালোচিত উপাসনাকার্য্য সম্পন্ন করিয়া, প্রাণত্যাগে প্রস্তুত হইলেন, চতুর্থ ব্যক্তির কনিষ্ঠ সহোদর পিনেসে ছিলেন, তিনি জ্যেষ্ঠের প্রাণনাশের উপক্রম দর্শনে যৎপরোনাস্তি কাতর ও শোকাভিভূত হইয়া, নিরতিশয় স্নেহভরে তাঁহাকে প্রগাঢ় আলিঙ্গন করিলেন, এবং অশ্রুপূর্ণ