পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
আখ্যানমঞ্জরী।

দ্বারা যেরূপ সঙ্কেত করিব, তদনুযায়ী কার্য্য করিবে। সে গৃহমধ্যে রুদ্ধ হইয়া এবং হাঁচেন্ বালককে তাহার পিতার নিকট সংবাদ দিতে পাঠাইল ইহা শুনিতে পাইয়া, গৃহ হইতে বহির্গত হইবার অশেষবিধ চেষ্টা পাইল, কিন্তু কোনও ক্রমে কৃতকার্য্য হইতে না পারিয়া, জানালা খুলিয়া তুরীশব্দ দ্বারা স্বীয় সহচরকে সতর্ক করিয়া বলিল, ঐ পথ দিয়া যে বালক দৌড়িয়া যাইতেছে, তাহাকে ধর এবং হাঁচেনের প্রাণবধ কর। হাঁচেন শুনিয়া, চকিত হইযা চারিদিক নিরীক্ষণ করিতে লাগিল, কিন্তু কাহাকেও দেখিতে পাইল না। বালক দ্রুতবেগে দৌড়িয়া যাইতেছে, কেহ তাহাকে ধরিল না, ইহা অবলোকন করিয়া সে বিবেচনা করিল, দুবাত্মা আমায় ভয় দেখাইয়া বশীভূত করিবার অভিপ্রায়ে মিথ্যা আস্ফালন করিতেছে। কিন্তু কিয়ৎ দূর গিয়া, বালক এক সেতুর উপর উপস্থিত হইবামাত্র, বটেলরের সহচর সেতুর নিম্নদেশ হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া, বালককে বগলে লইয়া সেই বাটীর দিকে ধাবমান হইল।

 এই অতর্কিত নূতন বিপদ উপস্থিত দেখিয়া, হাঁচেন অত্যন্ত শঙ্কিত ও চিন্তাম্বিত হইল, এবং সত্বর বাটীর মধ্যে প্রবেশ পূর্ব্বক দৃঢ়রূপে বহির্দ্বার রুদ্ধ করিয়া ফেলিল। এই দ্বার ব্যতিরিক্ত বাটীতে প্রবেশ করিবার আর পথ ছিল না। অনেক গুলি জানালা ছিল বটে, কিন্তু সে সমস্তই লোহার গরাদ দ্বারা বিলক্ষণরূপে রক্ষিত। সুতরাং দ্বিতীয় দস্যুর বাটীর মধ্যে প্রবেশ করিবার সম্ভাবনা নাই এই স্থির করিয়া, হাঁচেন্ ভাবিতে