পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আশ্চর্য্য দস্যুদমন।
৬৭

লাগিল, যদি প্রভুর প্রত্যাগমন পর্য্যন্ত ইহাদিগকে এই অবস্থায় রাখিতে পারি, তাহা হইলেই মঙ্গল, নতুবা ইহারা আমার প্রাণবধ করে তাহাও স্বীকার, তথাপি প্রাণ থাকিতে প্রভুর সর্ব্বনাশ করিতে পারিব না।

 হাঁচেন, উদ্বিগ্নচিত্তে উপবিষ্ট হইয়া এই চিন্তা করিতেছে, এমন সময়ে সেই দুরন্ত দস্যু দ্বারদেশে উপস্থিত হইল, এবং কুৎসিত কটূক্তিপ্রয়োগ ও অশেষবিধ ভযপ্রদর্শন পূর্ব্বক, হাঁচেন কে সম্বোধন করিয়া বলিল, যদি ভাল চাহিস্, দরজা খুলিয়া দে, নতুবা আমি দরজা ভাঙ্গিয়া প্রবেশ করিব। ঈশ্বরের ইচ্ছায় যাহা আছে তাহাই হইবে, হাঁচেন এইমাত্র উত্তর দিল। বালক, ভয়ে অস্থির হইযা ক্রমাগত বিকট চীৎকার করিতে লাগিল। হাঁচেন কোনও ক্রমে দ্বার উদ্ঘাটিত করিল না দেখিয়া, জানালা হইতে মুখ বাড়াইয়া বটেলব স্বীয় সহচরকে বলিল, যদি সে অবিলম্বে দরজা খুলিয়া না দেয়, তাহার সমক্ষে ঐ বালকের গলা কাটিয়া ফেল। ঈদৃশ ভয়প্রদর্শন শ্রবণে, হাচেনের হৃৎকম্প ও বুদ্ধিভ্রংশ হইল। তখন সে দ্বার খুলিয়া দিয়া, বালকের প্রাণরক্ষা করিতে উদ্যত হইল। কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষণেই বিবেচনা করিল, নিবপরাধ বালকের প্রাণবধ করায় উহাদের কোনও ইষ্টাপত্তি দেখিতেছি না। কিন্তু দ্বার খুলিয়া দিলে, আমার প্রাণবধ ও প্রভুর সর্ব্বনাশ অবধারিত। বিশেষতঃ, দ্বার খুলিয়া দিলে, বালকের প্রাণবধ করিবে না, তাহারই স্থিরতা কি। অতএব আমি কোনও ক্রমে দ্বার খুলিব না, ভাগ্যে যাহা আছে,