পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
আখ্যানমঞ্জরী।

কিরূপেই বা তাঁহাদের বিযোগসংঘটন করিয়া দিবেন। উভয়ের মধ্যে অলিন্দার উপরেই তাঁহার সমধিক আক্রোশ জন্মিয়াছিল কাবণ, অলিন্দা না থাকিলে তাঁহাব সাবিনসের সহিত পবিণয়- সংঘটনের আর কোনও প্রতিবন্ধক ছিল না।

 কিছুদিন পরেই, এরিয়ানাব মনস্কামনা পূর্ণ হইবার বিলক্ষণ সুযোগ ঘটিয়া উঠিল। দীর্ঘকাল ব্যাপিয়া, অপর এক ব্যক্তির সহিত সাবিনসের বিবাদ চলিতেছিল। ঐ বিবাদে তাঁহার পরাজযের কিছুমাত্র সম্ভাবনা ছিল না। দৈববিড়ম্বনায় উহার এরূপে নিষ্পত্তি হইল যে, সাবিনসের সর্ব্বস্বান্ত হইয়া গেল। এতদিন তিনি বিলক্ষণ সমৃদ্ধিশালী ব্যক্তি বলিযা গণনীয় ছিলেন, এক্ষণে একবারে নিতান্ত নিঃস্ব হইয়া পড়িলেন। এরিযানার যে তাঁহার উপর মর্ম্মান্তিক রোষ ও দ্বেষ জন্মিযাছিল, এপর্য্যন্ত তিনি তাহার বিন্দুবিসর্গও অবগত ছিলেন না। তিনি জানিতেন, এরিয়ানা তাঁহার অতি আত্মীয়, এজন্য এই দুঃসময়ে তাঁহার নিকট আনুকূল্য প্রার্থনা করিলেন। এরিয়ানা আনুকূল্য প্রদানে সম্মত হইলেন না। তদ্দর্শনে সাবিনস্ বিস্তর অনুযোগ ও ভর্ৎসনা করিলেন। তখন এরিয়ানা বলিলেন, তুমি যদি আমার মতানুসারে চল, এবং আমি যে প্রস্তাব করিব তাহাতে সম্মত হও, তাহা হইলে আমি তোমার হস্তে সর্ব্বস্বসমর্পণ করিব, এবং যাবজ্জীবন তোমার আজ্ঞানুবর্ত্তিনী হইযা চলিব। আমার প্রস্তাব এই, তুমি অদ্যাবধি অলিন্দা সংস্রব পরিত্যাগ কর।

 সর্বস্বান্ত হওয়াতে, সাবিনস যার পর নাই দুরবস্থায়