পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৮
আখ্যানমঞ্জরী।

ভয়ে অভিভূত হইয়া তোমার কটিবন্ধ ছাডিয়া দিব, নয় টানাটানি করিয়া তোমাকেও জলমগ্ন করিব, অতএব ও কথায় আর কাজ নাই। বলিতে কি, তোমার প্রস্তাব শুনিযা, আমার হৃৎকম্প হইতেছে। আমার কথা শুন, আমার ভাগ্যে যাহা আছে, তাহাই ঘটিবে, তুমি আত্মবক্ষার উপায় দেখ। আর বৃথা সময় নষ্ট করিও না, এস, তোমায শেষ আলিঙ্গন করি। এই বলিয়া রজর্, অশ্রুপূর্ণলোচনে এণ্টোনিয়কে আলিঙ্গন করিল। তখন এণ্টোনিয় বলিল, বয়স্য, রোদন করিতেছ কেন? এ অশ্রুবিসর্জ্জনেব সময় নয়। উপায়চিন্তনে বিরত অথবা উপস্থিত উপায়ের অবলম্বনে বিমুখ হইয়া অশ্রুবিসর্জ্জন করা নারীর কর্ম্ম, এরূপ আচরণ করা পুরুষের ধর্ম্ম নহে। অতএব সাহস অবলম্বন কর, আর বাধা দিও না। যদি আর বিলম্ব কর, উভযেই মারা পড়িব, পবে আর এরূপ সুযোগ ঘটিবে না। আমি তোমায় শেষ কথা বলিতেছি, যদি তুমি আমার প্রস্তাবে সম্মত না হও, আমি এই মুহূর্তে তোমার সমক্ষে আত্মঘাতী হইব।

 এণ্টোনিয় এই কথা বলিয়া, স্বীয় প্রিয় বয়স্যের প্রত্যুত্তরের প্রতীক্ষা না করিয়াই, তাহাকে ধাক্কা দিয়া সমুদ্রে ফেলিল, এবং স্বয়ং তাহার অনুবর্ত্তী হইল। রজর্, সমুদ্রে পতিত হইবামাত্র, ভয়ে বিহ্বল হইযা জীবনের আশায় বিসৰ্জ্জন দিয়াছিল। কিন্তু এণ্টোনিয় তাহাকে আশ্বাস ও সাহস প্রদান করিয়া, অনেক কষ্টে স্বীয় কটিবন্ধধারণে সম্মত করিল, এবং পাছে রজর্