পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
আখ্যানমঞ্জরী।

আমাদের পিতা বিদ্যমান আছেন। তিনি একখানি জলযান কিনিযা, নানাবিধ দ্রব্য লইযা, বার্ববিদেশে বাণিজ্য করিতে গিযাছিলেন। দুর্ভাগ্য বশতঃ প্রবল দ্স্যুদল, আক্রমণ ও সর্ব্বস্বহরণ পূর্ব্বক, ত্রিপোলী প্রদেশে লইয়া গিযা, তাঁহাকে দাসব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রীত করিয়াছে। তিনি তথা হইতে আদ্যোপান্ত সমস্ত বৃত্তান্ত লিখিযা বলিযাছেন, যে ব্যক্তি আমায় কিনিয়াছেন, তিনি নিতান্ত অভদ্র ও নির্দ্দয় নহেন, আমার পক্ষে বিলক্ষণ সদয় ব্যবহার করিয়া থাকেন, এবং টাকা পাইলে, আমায় ছাডিয়া দিতে সম্মত আছেন। কিন্তু, তিনি এত অধিক টাকা চাহিতেছেন যে, কোনও কালে, আমি ঐ টাকার সংগ্রহ করিতে পারিব, তাহার কিছুমাত্র সম্ভাবনা নাই, সুতরাং আর আমার দেশে যাইবার আশা নাই। অতএব, তোমরা, আমায় আর দেখিতে পাইবে, সে আশা করিও না।

 এই কথা বলিতে বলিতে, তাহাদের দুই সহোদরের শোকানল প্রদীপ্ত হইয়া উঠিল। তদীয় নয়ন হইতে অবিশ্রান্ত অশ্রুধারা বিনিঃসৃত হইতে লাগিল। কিয়ৎক্ষণ পরে, শোকসংবরণ করিয়া, তাহারা বলিল, মহাশয়, আমাদের পিতা অতিশয় পুত্ত্রবৎসল, তাঁহার অদর্শনে আমরা জীবন্মত হইয়া আছি। যত টাকা