পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
আখ্যানমঞ্জরী।

অবমাননা করিলে, অবিলম্বে তাহার সমুচিত প্রতিফল দিতেছি, এই বলিযা, সভাগৃহ হইতে বহির্গত হইলেন, কিন্তু, কিয়ৎক্ষণ পবেই, নিতান্ত শান্তিমূর্তি হইয়া, সভাগৃহে প্রবেশ করিলেন, এবং সাদর সম্ভাষণ পুবঃসব সেই সন্ত্রান্ত ব্যক্তিকে বলিলেন, আপনি যাহা বলিলেন, আমি তাহার মর্ম্মগ্রহ করিতে পারিয়াছি। বাস্তবিক, যে ব্যক্তি, রাজা হইয়া, প্রজার হিতসাধনে যত্নবান্ না হইবে, প্রজারা কখনই তাহার অনুগত থাকিবে না। আমি ধর্ম্মসাক্ষী করিয়া, সর্বসমক্ষে প্রতিজ্ঞা কবিতেছি, আজ অবধি, অর আমি মৃগয়া বা অন্যবিধ ব্যসনে, ক্ষণকালের জন্যও আসক্ত হইব না, অনন্যমনাঃ ও অনন্যকর্ম্মা হইযা, সৰ্বপ্রযত্নে রাজকার্যসম্পাদনে তৎপর হইব, প্রাণান্তেও এই প্রতিজ্ঞাব লঙ্ঘন করিব না।

 এই প্রতিজ্ঞাবাক্য শ্রবণগোচর করিয়া, রাজসভায সমবেত সম্রান্তগণ ও অমাত্যবর্গ আহলাদসাগরে মগ্ন হইলেন, এবং আশীৰ্বাদপ্রয়োগ পূর্ব্বক, রাজাকে ধন্যবাদ দিতে লাগিলেন। রাজা, সেই দিন অবধি, মৃগয়া প্রভৃতি সর্ব্ববিধ ব্যসনে বিসর্জ্জন দিযা, দিবারাত্র, রাজকার্য্যসম্পাদনে নিবিষ্টচিত্ত হইলেন, একদিন একক্ষণের জন্যও, সে বিষয়ে অযত্ন বা উপেক্ষা করেন নাই। ফলতঃ, তিনি রাজ্যের যেরূপ মঙ্গলবিধান ও প্রজাবর্গের