পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
আখ্যানমঞ্জরী।

স্থানে উপস্থিত হইলেন, তাহার তাদৃশী দশা দর্শনে দয়ার্দ্রচিত্ত হইয়া, তাহাকে আপন অলিয়ে লইযা গেলেন; এবং সবিশেষ যত্ন সহকারে, অশেষ প্রকারে, তাহার শুশ্রুষা কবিতে লাগিলেন। চল্লিশ দিন তাঁহার আশ্রয়ে থাকিয়া, সে ব্যক্তি সম্পূর্ণ সুস্থ ও সবল হইয়া উঠিল। তিনি দয়া করিয়া, স্বীয় আলয়ে না লইয়া গেলে, এবং সবিশেষ যত্ন, পরিশ্রম ও অর্থব্যয়স্বাকার পূর্ব্বক, তাহার শুশ্রুষা না করিলে, সে নি সন্দেহ, কালগ্রাসে পতিত হইত। তিনি, যথোপযুক্ত পরিচ্ছদ ও আবশ্যক পাথেয় দিযা তাহাকে স্বদেশগমনার্থ বিদায় করিলেন।

 প্রস্থানকালে, সৈনিক পুরুষ স্বীয় আশ্রয়দাতাকে বলিল, মহাশয, আমার সৌভাগ্যক্রমে, আপনি, সেদিন, সেস্থানে উপস্থিত হইয়াছিলেন, নতুবা অমার অবধাবিত প্রাণবিয়োগ ঘটিত। অপিনি, আমার জন্য, যেরূপ যত্ন, যেরূপ পরিশ্রম, যেরূপ অর্থব্যয় করিছেন, পিতা, পুত্রের জন্য, সেরূপ করিতে পাবেন কি না, সন্দেহস্থল। আপনি আমার যে উপকার করিয়াছেন, আমি কস্মিন্ কালেও তাহা ভুলিতে পারিব না। অধিক আর কি বলিব, আপনি আমার জন্মদাতা পিতা অপেক্ষাও অধিক। এইরূপ বলিয়া, অসমযে আশ্রয়দাতার নিকট বিদয় লইয়া, সৈনিকপুরুষ স্বদেশ অভিমুখে প্রস্থান করিল।