পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রকৃত ন্যায়পরতা।
৭১

পাকশালার সমীপবর্ত্তী পটমণ্ডপে উপবিষ্ট ছিলেন, লবণের অভাবে, পাকশালায় যে গোলযোগ উপস্থিত হইযাছিল, এবং অবশেষে, প্রধান পরিচারক এক ব্যক্তিকে যেরূপে লবণ আনিবার নিমিত্ত পাঠাইল, সমস্ত জানিতে পারিয়াছিলেন। যে ব্যক্তি লবণ আনিতে যাইতেছিল, তিনি তাহাকে আপন নিকটে আনাইলেন, এবং বলিলেন, প্রকৃত মূল্য না দিয়া, লবণ আনিলে, আমি অতিশয় অসন্তুষ্ট হইব। অতএব, সাবধান, যেন প্রকৃত মূল্য না দিয়া, কাহারও নিকট হইতে লবণ, অথবা অন্য কোনও দ্রব্য লওয়া না হয়।

 এই রাজকীয় আদেশ ও উপদেশ অনুসারে, সে ব্যক্তি প্রধান পরিচারকের নিকটে গিয়া, সবিশেষ সমস্ত বলিয়া, মূল্যপ্রার্থনা করিল। পাকশালাস্থ পরিচারকবর্গ, ঈদৃশ অতি সামান্য বিষয়েও রাজার তাদৃশ মনোযোগ দেখিয়া, যৎপবোনাস্তি বিস্মাপন্ন হইল। প্রধান পরিচারক রাজসমীপে উপস্থিত হইয়া, বলিল, মহারাজ, মূল্য না দিয়া আপনার জন্য যৎকিঞ্চিৎ লবণ লইলে, কি কোন দোষ হইতে পারে?

 প্রধান পবিচারকের এই বাক্য শুনিয়া, ঈষৎ হাস্য করিয়া, রাজা বলিলেন, দেখ, এক্ষণে পৃথিবীতে সচরাচর, যত অত্যাচার ও অন্যায়াচরণ লক্ষিত হইয়া থাকে,