পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ন্যায়পরতার পুরস্কার।
৭৫

তোমার নির্দ্দেশ অনুসারে, ঐ ক্ষেত্রসংক্রান্ত ক্ষতিপূরণের নিমিত্ত তোমায় পাঁচ শত টাকা দিয়াছি, তাহাতে কি তোমার সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ হয নাই?

 ভূম্যধিকারীর বাক্য শ্রবণগোচর করিয়া, সেই প্রজা, বিনয়নবচনে নিবেদন করিল, মহাশয়, ঐ ক্ষেত্রে আমায় কোনও অংশে ক্ষতিগ্রস্ত হইতে হয় নাই। এ বৎসর প্রচুর শস্য জন্মিয়াছে। অন্যান্য বৎসর, আমার যেরূপ লাভ হয়, এ বৎসর তদপেক্ষা অনেক অধিক লাভ হইয়াছে। এজন্য আমি আপনকার দত্ত ক্ষতিপূরণের পাঁচ শত টাকা ফিরিয়া দিতে আসিয়াছি। এই বলিয়া, সে, ভূম্যধিকারীর সম্মুখে পাঁচ শত টাকা রাখিয়া দিল।

 প্রজার এতাদৃশী ন্যায়পরতা দর্শনে চমৎকৃত হইয়া, ভূম্যধিকারী প্রীতিপ্রফুল্ল লোচনে, সস্নেহ বচনে বলিলেন, এরূপ ব্যবহার দেখিলে, আমার বড় আহ্লাদ হয়। মনুষ্যমাত্রেরই এরূপ ব্যবহার করা সর্ব্বতোভাবে উচিত ও আবশ্যক। এই বলিয়া, তিনি সেই প্রজার সহিত সাতিশয় সদয়ভাবে কিযৎক্ষণ কথোপকথন করিলেন, এবং তদীয় অবস্থা ও পরিবার প্রভৃতি সমস্ত বিষয়ের সবিশেষ পরিচয় লইলেন, অনন্তর, গাত্রোত্থান পূর্ব্বক, পার্শ্ববর্তী গৃহে প্রবেশ করিয়া, সহস্র মুদ্রা লইযা প্রত্যাগমন করিলেন; এবং, এ তোমার নিরতিশয় প্রশংসনীয়