পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯০
আখ্যানমঞ্জরী।

দেশে আর তিষ্ঠিতে পারা যায় না। কেহ কাহারও নামে মিথ্যা অভিযোগ উপস্থিত করিলে, রাজপুরুষেরা সে বিষয়ে কোনও অনুসন্ধান না কবিয়াই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দণ্ড দেন, আর রাজপুরুষেরা কাহারও উপর কোনও কারণে অসন্তুষ্ট হইলে, তাহার নামে মিথ্যা অভিযোগ উপস্থিত করাইয়া দণ্ড দিয়া থাকেন।

 অবশেষে রাজা, এক কয়েদীর নিকটে উপস্থিত হইয়া, তাহাব কারারুদ্ধ হইবার কারণ জিজ্ঞাসিলে, সে বলিল, মহারাজ, আমি অতি দুষ্টস্বভাব ব্যক্তি, স্বভাবদোষে কত লোকের উপর কত অত্যাচার ও কত লোকের কত অনিষ্ট করিয়াছি, বলিতে পারি না। প্রকৃত কথা বলিতে গেলে, আমার মত দুবাত্মা আর নাই। পূর্ব্বে আমি আপন দোষ বুঝিতে পারিতাম না, এক্ষণে সবিশেষ অনুধাবন করিয়া স্পষ্ট বুঝিতে পারিয়াছি, আমার যেরূপ গুরুতর অপরাধ, সে বিবেচনায় আমি লঘু দণ্ড পাইয়াছি। এই বলিতে বলিতে, তাহার নয়নযুগল হইতে প্রবল বেগে বাষ্পবারি বিগলিত হইতে লাগিল।

 তাহার কথা শুনিয়া ও তাহার ভাব দেখিয়া, রাজা অতিশয় সন্তুষ্ট হইলেন, এবং স্থিব-দৃষ্টিতে কিয়ৎক্ষণ নিরীক্ষণ করিয়া, তত্ত্বাবধায়ককে বলিলেন, আমার বিবেচনায় এ ব্যক্তিরই কারামুক্ত হওয়া উচিত। অতএব;