পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নিঃস্পৃহতা ও উন্নতচিত্ততা।
৯৩

বুঝিতে পারিলেন, সভাপতি রীড্‌সাহেবকে হস্তগত করিতে পারিলে, ইংলণ্ডের ইষ্টসিদ্ধির পথ পবিষ্কৃত হয়, তখন তাঁহারা রীড্‌সাহেবের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া বলিলেন, যদি আপনি উপনিবেশের সংস্রব পবিত্যাগ করিয়া, ইংলণ্ডের পক্ষ অবলম্বন করেন, তাহা হইলে আমরা আপনকার যথোচিত সম্মান করি।

 এই বলিয়া তাঁহারা তাঁহাকে দশসহস্ৰ গিনি উৎকোচ দিবার অভিপ্রায় প্রকাশ করিলেন। বীড্‌সাহেব, উৎকোচদানের প্রস্তাব শ্রবণে মনে মনে যৎপরোনাস্তি বিরক্ত হইয়া, সহাস্য বদনে বলিলেন, দেখুন, আমি অতি হীন, তাহার সন্দেহ নাই, কিন্তু আপনাদের রাজা আমায় কিনিতে পারেন, তাঁহার এত টাকা নাই। এই বলিয়া, তিনি, তাহাদিগকে তৎক্ষণাৎ বিদায় করিয়া দিলেন।

 ফলকথা এই, অর্থলোভের বশীভূত হইয়া, উৎকোচগ্রহণ পূর্ব্বক স্বদেশের হিতসাধনে বিরত অথবা অনিষ্ট-সাধনে প্রবৃত্ত হইবেন, মহামতি সেনাপতি বীড সাহেব সেরূপ প্রকৃতির ও সেরূপ প্রবৃত্তির লোক ছিলেন না। যাহাদের অর্থলোভ অতি প্রবল, এবং ধর্মাধর্ম্মবোধ ও উচিতানুচিত বিবেচনা নাই, সেই নিতান্ত নীচাশয় নরাধমেরাই উৎকোচগ্রহণে প্রবৃত্ত হয়। আর যাহারা ন্যায়মার্গ অনুসারে কৃতকার্য্য হইতে না পারে; সেই