পাতা:আগামীকাল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রামবাসী নারী-পরিষদের ঐকান্তিক আগ্রহ ও আন্তরিক প্রয়াসে, সরকারের আর্থিক সাহায্য ব্যতীত ধে ভাবে সমিতি প্রসতি সদন গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে তা সমগ্র দেশের কাছে এক জলত উদাহরণ স্থাপন করেছেন। আজ যে শিশ, ভূমিষ্ঠ হয়েছে তাকে সমঠভাবে লালন পালন করে বাঁচিয়ে রাখার প্রবায়িত্ব কেবলমাত্র নারী-কল্যান-সমিতির সদস্যাদেরই এ-কথা মনে করলে আমরা দারণ ভুল করব । বরং একে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আপনাদের, আমাদের-সকলের। এখানে নেতা হবার অত্যুগ্র লোভ করো নেই । দলাদলি ও সঙ্কীর্ণ তার এতটুকুও স্থান নেই। নিঃসবার্থভাবে কাজ করার তাগিদেই এখানে বড় হয়ে দেখা দিতে পেরেছে বলেই সমিতি প্রসতি সদন এর মত একটি অত্যাবশ্যকীয় সেবামলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। সদ্য জন্ম-লবধ প্রতিস্ঠানটিকে বাঁচিয়ে রাখার অধোঁক দায়িত্বভার আমি মোবস্থায় মাথা পেতে নিচ্ছি। অথাৎ এর জন্য যেপরিমাণ অর্থ প্রতি মাসে ব্যয় হবে অধোক আমি বহন করব, প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। এদেশে নারীর স্থান কোন পর্যায়ে ? 'নারী জাগরণের প্রয়োজনীয়তা কেন ? আমরা নারীকে পরগাছা হিসেবে দেখে থাকি ? আমাতু্য পরম খাপেক্ষী হয়েই ওদের কাটাতে হয়। জন্মের পর থেকে বালো ও কৈশোরের দিনগালো পিতা-মাতার ওপর নিভাির করে কাটাতে হয়। যৌবনে স্বামীর ওপর সম্পণে নিভরশীল থাকতে হয়। স্বামী মদ্যপ ও লক্ষাপট হলেও ওকে দেবজ্ঞানে সেবা করতে বাধ্য থাকে। বাধক্য কাটে সন্তান বা আত্মীয় স্বজনের হাতের মাঠোয়। পৈত্রিক সম্পত্তির ওপর কোন অধিকার নারীর থাকে না। যদিও ভারতপথিক রামমোহনের আন্তরিক প্রচেস্টার ফলে সহমরণ আইন করে বন্ধ করা হয়েছে, তব কি এদেশ থেকে কুখ্যাত সহমরণ প্রথা সম্পপণ লোপ পয়েছে ? স্বামীর চিতায় আত্মাহতি দেবার জন্য প্রলোভন ও বল প্রয়োগ করা হচেছ না ? চতুদিকে একটা সতক দণ্টি রাখলেই শনতে পাবেন কত অসহায় নারী জঘন্য পণপ্রথার জন্য স্বামী ও *বশরকুলের দাবিষহ যন্ত্রণায় দগধ হয়ে শেষ পর্যন্ত আত্মাহতির পথকে আকড়ে ধরতে বাধ্য হচ্ছে । এর আসল কারণ কোথায় ? আমি বলব, সমমর্যাদা ও সমঅধিকারের আইন, ধর্ম ও নৈতিকতার অভাব। আর এর জন্য চাই শ্রেী-শিক্ষার বিস্তার। শিক্ষা ও নৈতিক চরিত্রবলাই নারীকে স্বাবলম্বী করে তুলতে সক্ষম । কেবলমাত্র নারীজাগরণ বলে চিৎকার করলেই হবে না। নারীর চোখের ঠলি খালে ফেলতে হলে সবার আগে চাই অশিক্ষার অন্ধকার দাির করা । আজকের এই সভায় আমাদের এ-ব্রতই গ্রহণ করতে হবে যে, প্রতিটি মৌজায় না হোক প্রতি তিনটি মৌজায় আমরা একটা করে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও প্রতি দশটি মৌজায় একটি করে উচ্চ বিদ্যালয় গড়ে তুলব, যেখানে ছেলেমেয়েরা এক সঙ্গে পঠন গঠনের সষোগ পাবে। একাজে আমরা সরকারের ওপর চাপ সন্টি করেই ক্ষান্ত থাকব না । আন্তরিকতার সঙ্গে কমের বাস্তব উদ্যোগ নিয়ে, কেউ সেবচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে আমাদের প্রয়োজন আমরাই মিটিয়ে নেব । আমার দািঢ় বিশ্ববাস, একে একের বোঝা বলে মনে হলেও দশের কাছে সামান্য তৃণ বলেই মনে হবে। গালে হাত দিয়ে বসে ভাববার সময় নেই! মোন্দাকথা, আজ থেকেই আমরা কোমর বোধে, t