৷৴৹
হইয়াছেন, এই সময়ে তিনি তদ্রূপ ছিলেন না। পাঠে অত্যাসক্তি নিবন্ধন প্রায় দিবারাত্রি পুস্তক লইয়াই থাকিতেন। সন্ধ্যা রাত্রিতে নয়টার বেশী পড়িতেন না বটে, কিন্তু শেষ রাত্রিতে তিনটার সময় উঠিয়া পুস্তক পাঠ করিতে অত্যন্ত ভালবাসিতেন; কোনরূপ বিঘ্ন ঘটিলে তিনি মনে মনে অত্যন্ত দুঃখিত হইতেন। একদিন উঠিয়া দেখিলেন, তাঁহার প্রদীপে তৈল নাই এবং ঘরেও কোনরূপে তৈল পাইবার উপায় নাই, তখন অনন্যোপায় হইয়া ফুলেল তৈল প্রদীপে ঢালিয়া পড়িতে আরম্ভ করেন। আহার সম্বন্ধে তাঁহার বিশেষ সংযম ছিল না; নিজের খেয়ালে যাহা আসিত, তাহাই আহার করিতেন। আহার সময়েরও কোনরূপ ধরাবাঁধা নিয়ম ছিল না, যতবার খুসি আহার করিতেন। শরীরের প্রতি এইরূপ অনিয়মিত অত্যাচারের ফলে বালক প্রফুল্লচন্দ্র শীঘ্রই পীড়িত হইয়া পড়েন, এবং দুরন্ত আমাশয় রোগ তাঁহাকে আক্রমণ করে। তিনি এই রোগে প্রায় দুই বৎসর ভুগিয়াছিলেন; প্রথম বৎসর রোগভোগে এবং দ্বিতীয় বৎসর রোগজনিত দুর্ব্বলতায় তাঁহাকে বিদ্যালয় পরিত্যাগ করিয়া বাটীতেই বসিয়া থাকিতে হইয়াছিল।
আহার ও অধ্যয়ন রীতি সম্বন্ধে এই সময়ে প্রফুল্লচন্দ্রের জীবনে সম্পূর্ণ পরিবর্ত্তন উপস্থিত হয়। পাঠ ও ভোজন বিষয়ে যে সংঘম তাঁহার মহৎ চরিত্রের অংশ স্বরূপ হইয়া তাঁহাকে সাধারণের আদর্শ স্থানীয় করিয়াছে,তাহার বীজ এই সময়েই উপ্ত হইয়াছিল। যাহাকে বলে ‘ঠেকিয়া শেখা’ তাঁহার তাহাই হইয়াছিল। আহারে অসংযত বালক রোগে পড়িয়া একেবারেই সংযমী হইয়া উঠিলেন। অধ্যয়ন প্রণালী সম্বন্ধেও এই সময়ে ঘোর পরিবর্ত্তন ঘটে। অসুখে পড়ার পর হইতে তিনি কদাচ শেষ রাত্রিতে পড়িতেন না; এবং