পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অন্নসমস্যা , ዒ¢ বড় বড় কারখানা খুলতে হবে। কারখানা থেকে একদিকে যেমন উৎপন্ন দ্রব্য আমরা দেশ-বিদেশে পাঠাতে পারব, অন্যদিকে তেমনি শিল্পশিক্ষার দ্বার যথার্থভাবে উন্মুক্ত হবে। কল্পনা অনেক দূর ছুটেছে বটে, কিন্তু এই সবকল্পনাকে বাস্তবে পরিণত করতেই হবে যদি আমাদের এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকবার সাধ থাকে। এই দেখুন, মিঃ জি সি সৈন—ইংলণ্ড থেকে ইনি Dyeing বা রং-করা শিখে এসেছেন। কিছুদিন ইনি বঙ্গলক্ষ্মী মিলে কাজ করলেন । কিন্তু বঙ্গলক্ষ্মীতে কাজের ক্ষেত্র সঙ্কীর্ণ। সেখানকার কাজ এত বড় নয় যে ঐরুপ একজন বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হয় । একজন চলনসই লোক থাকলেই সেখানে চলে যায়। কাজেই তাকে ঘুরে ফিরে গবর্ণমেণ্টের চাকুরী নিতে হোলো। এত কষ্ট স্বীকার ক’রে শিল্প সম্বন্ধে যে বিদ্যাটুকু তিনি বিদেশ থেকে নিয়ে এলেন উপযুক্ত ক্ষেত্রের অভাবে সে বিদ্যার কোন ব্যবহারই হলো না। সেইরূপ এ সি সেন, এস কে দত্ত প্রভৃতি। শরৎকুমার দত্ত জার্ম্মানিতে ইলেকটি ক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং শিখে এসে দেশে কোন কাজ যোগাড় করতে ন পেরে শেষে জার্ম্মানির যে কারখানায় কাজ শিখেছিলেন সেইখানেই ফিরে গেলেন। তিনি এখন সেইস্থানে খুব একটা উচ্চপদ অধিকার ক’রে আছেন । এদেশে বড় কারখানা থাকলে তিনি শক্তির পরিচয় দিতে পারতেন সন্দেহ নেই। এখানেও অনেক ছাত্র রসায়নে এম-এ ব: এম-এস-সি পাশ ক’রে যুরোপীয়ানদের কারখানায় চাকরী নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তার্নফসে যেমন বাবু কুলী থাকে, এরাও তেমনি কেমিক্যালকুলী—দেশ থেকে অর্থ শোষণ ক’রে নিতে যুরোপীয়ানদের সাহায্য করছেন। তাই বলছিলাম—আমাদের কারখানা খুলতে হবে। ফলিত বিজ্ঞানের (Applied Science) সাহায্যে আমাদের বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খাড় ক’রে তুলতে হবে।