অন্ন-সমস্যা ও তাহার
সমাধান[১]
ম্যালেরিয়ায় দেশ শ্মশান হইয়াছে। দুই-একটি জেলা ছাড়া সমগ্র দেশে জন্ম হইতে মৃত্যুর আধিক্য। ম্যালেরিয়ার অন্যতম কারণ অন্নাভাব। উদর পূর্ত্তি করিয়া দুবেলা আহার করিবার সৌভাগ্য শতকরা ক’জনের আছে, তাহা তো সকলেই জানেন। আজ দেশের যেদিকে দৃষ্টিপাত করা যায় সর্ব্বত্র অন্নাভাব ও হাহাকার।
এই দুরবস্থা হইল কেন? আজ যে হঠাৎ হইয়াছে, এমন নয়। আজ শত বর্ষ ধরিয়া তিল তিল করিয়া আমরা এই দুঃখ অর্জ্জন করিয়াছি। আমাদের কার্য্যক্ষেত্র সঙ্কীর্ণ—ক্ষুদ্র গণ্ডীর আবেষ্টনে সীমাবদ্ধ। ইংরেজ রাজত্বের প্রারম্ভ হইতে ইংরেজী লেখাপড়া শিখিয়া আমরা কেবল উকীল, মোক্তার, ডাক্তার ও কেরাণী হইতেছি। এ রকম করিয়া জাতি কতদিন টিকে? দেশে মাম্লা মোকদ্দমা যখন আছে, তখন উকীলদের দর্কার। ব্যামো পীড়ার প্রকোপ নিবারণকল্পে ডাক্তারও একটা আবশ্যকীয় আপদ্। প্রয়োজনের প্রায় বিশগুণ অধিক উকীল সৃষ্ট হইয়াছে এবং প্রবলবেগে আরো সৃষ্ট হইতেছে। আশু-বাবু হোমিওপ্যাথিক বিষে বিষক্ষয় নীতির অনুসরণ করিয়া আরো উকীল তৈরী করিতেছেন।
মুসলমান রাজত্বের অবসানে বাঙ্গালী হিন্দু বুঝিয়া লইলেন যে, পার্শী পড়িয়া মুন্সী হইলে আর চলিবে না। তখন উদরান্নের সংস্থান ও মানসিক
- ↑ টাঙ্গাইল জনসাধারণের নিকট প্রদত্ত মৌখিক বক্তৃতার সারাংশ। শ্রীমান জ্ঞানেন্দ্রনাথ রায়, এম্-এস-সি কর্ত্তৃক অনুদিত।