ঢালাইয়ে কত লোক খাটে। হাতুড়ির ঘায়ে আর অবশ্য এখন পেটাই হয়, না, কিন্তু বাতাস-ঠেলা হাতুড়ি (pneumatic hammer) চালাইতেও কম লোক লাগে না। তারপর জাহাজ চালাইতে কয়লার দর্কার। খনিতে কত লোক খাটে তাহা আপনারা জানেন। এইরূপে একটি ব্যবসায় আরো কত ব্যবসায়কে জীবিত রাখে।
টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরাসডাঙ্গা অঞ্চলে যে-সমস্ত উৎকৃষ্ট বস্ত্র নির্ম্মিত হইত, লাঙ্কাসায়ার এদের স্থান কাড়িয়া লইয়া খুব উন্নত হইয়াছে এ-কথা সকলেই জানি। কিন্তু তাহাদের উন্নতি সম্বন্ধে বিবরণ পড়িয়া কোন স্পষ্ট ধারণা হওয়া সম্ভব নয়। সেদিন বিলাতে ম্যাঞ্চেষ্টারের পাইকারী সমবায় ভাণ্ডার (Co-operative Wholesale Stores) দেখিতে গিয়াছিলাম। আমি ও কয়েকটি ভারতীয় ছাত্র কর্ম্মকর্তার সঙ্গে দেখিতে যাই! মোটর কারে কার্য্যস্থলে আমাদিগকে লইয়া গেলে দেখিলাম তাঁহাদের বাৎসরিক বিক্রি প্রায় ১৫০ কোটী টাকা। আর আমাদের ভারত-সাম্রাজ্যের সমগ্র রাজস্ব হচ্ছে ১৩২ কোটী টাকা। ব্যাপার কি বুঝুন! তাদের বিক্রি তো বাইরে নয়, শুধু নিজেদের অংশীদারদের মধ্যে। আট দশটি বিস্কুটের ও সাবানের কারখানা। নিজেদের গো-চারণের সুবিস্তীর্ণ মাঠে শত সহস্র গাভী,। সেই-সমস্ত গাভীর দুগ্ধে নিজেদের জন্য জমাট্ দুধ তৈরি হয়। নিজেদের জাহাজে সুদূর সিংহল হইতে নিজেদের বাগানে উৎপন্ন চা আনা হয়।
এই ল্যাঙ্কাসায়ারে যুদ্ধের পূর্ব্বে প্রতিবৎসরে ৩০০ কোটী টাকার কাপড় তৈরি হইত। তন্মধ্যে প্রায় ৭৫ কোটী টাকার উপর ভারতবর্ষে আসিত। যে-সমস্ত কারখানায় ৩০০ কোটী টাকার কাপড় তৈরি হয়, তাহাতে কত কল-কার্খানা, কত যন্ত্রপাতি, কত ম্যানেজার, সহকারী ম্যানেজার ও কত লক্ষ শ্রমজীবীর প্রয়োজন তাহা চিন্তা করুন।