॥৶৹
সেন তখন এই স্কুলের অধিনায়ক (Rector) ছিলেন। তিনি ইংরাজী সাহিত্যের অধ্যাপনা করিতেন। তাঁহার ন্যায় ইংরাজী ভাষার শিক্ষক তখনকার দিনে বাস্তবিকই দুর্লভ ছিল। শুধু তখনকার দিনে কেন, ইংরাজী শিক্ষার প্রচলন হইতে অদ্য পর্য্যন্ত যে সমস্ত বাঙ্গালী শিক্ষক ইংরাজী ভাষার অধ্যাপনায় কৃতিত্ব লাভ করিয়াছেন, কৃষ্ণবিহারী তাঁহাদিগের অন্যতম। এই বিদ্যালয়ে ব্রাহ্ম শিক্ষকগণের সাহচর্য্যে তিনি ব্রাহ্ম সমাজের প্রতি শ্রদ্ধাবান হইয়া উঠেন; কালক্রমে কেশবচন্দ্র সেনের বক্তৃতায় এই শ্রদ্ধা হইতে আকর্ষণ জন্মে, এবং ১৮৮২ খৃঃ অব্দে তিনি ব্রাহ্ম সমাজের সভ্য হন। প্রফুল্লচন্দ্র এফ, এ, পড়িবার জন্য বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মেট্রপলিটান কলেজে ভর্ত্তি হন।
ঠিক এই সময়ে বঙ্গদেশে এক নবজাগরণের সাড়া পড়িয়া যায়। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বিধবাবিবাহ বিষয়ক আন্দোলন সমাজের সর্ব্ব স্তরে প্রবেশ করিয়া সকলকেই ভালমন্দ বিবেচনায় নিয়োজিত করিয়াছিল। কেশবচন্দ্র সেনের উদ্দীপনাময়ী বক্তৃতায় অনেকেই ধর্ম্ম সম্বন্ধে উদার মত পোষণ করিতে আরম্ভ করেন। অন্য দিকে মাননীয় সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আনন্দমোহন বসু প্রভৃতি ভারতসভা স্থাপিত করিয়া জাতীয় মিলনের পথ পরিষ্কার করিতেছিলেন। যুবক প্রফুল্লচন্দ্রের উপর ইঁহাদের সকলেরই প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। কেশবচন্দ্র সেনের বক্তৃতায় অনুপ্রাণিত হইয়া ইনি ব্রাহ্মমতাবলম্বী হন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বিধবাবিবাহ প্রচারের চেষ্টা ও হিন্দু নেতৃগণের অযৌক্তিক প্রতিশোধ-তৎপরতা দেখিয়া তিনি হিন্দুসমাজের সংস্কারের আবশ্যকতা উপলব্ধি করিতে থাকেন। আনন্দমোহনের দৃঢ়তা, সততা ও দেশসেবাব্রতে তিনি অনুপ্রাণিত হইয়া তাঁহার ভক্ত হইয়া উঠিলেন। সর্ব্বোপরি দেশনায়ক সুরেন্দ্রনাথের জ্বালাময়ী