পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অন্ন-সমস্যা ও তাহার সমাধান
৯১

অংশীদারদের আয়ের উপর ম্যানেজিং এজেণ্টদের কমিশন ইত্যাদি আছে। কাজেই এক একটি পাটের কল অনায়াসে যে কোন একটি বিশাল জমিদারীকে কিনিতে পারে।

 আমরা ভাবি, সিবিলিয়নগণ এ দেশের কত অর্থই না শোষণ করিয়া লইতেছেন। কিন্তু ২।৪টি ইংরেজ কোম্পানী যাহা লয়, সমস্ত ভারতবর্ষের সিবিলিয়ানগণ তাহা লন না। অথচ এ দিকে আমাদের লক্ষ্য নাই। ইহা অনায়াসেই প্রতিকারযোগ্য, অথচ কোন চেষ্টাই নাই।

 আমরা আমাদের যুগে যুগে সঞ্চিত পাপের প্রায়শ্চিত্ত করিতেছি। মনু মহাশয় ব্যবস্থা দিলেন, সমুদ্রযাত্রা করিলে পতিত হইতে হইবে! কাজেই বাড়ী থেকে বাহির হওয়া আমাদের ঘটিয়া উঠিল না। কিন্তু আমরাই সিংহল, জাভা, বলিদ্বীপ প্রভৃতি স্থানে বাণিজ্য ও উপনিবেশ স্থাপন করিয়াছি। তারপর, হাঁচি টিকটিকি প্রভৃতির উপদ্রবে যেমন মন আমাদের সঙ্কুচিত হইল, অমনি কর্ম্মচেষ্টা, উদ্যম, উদ্যোগ প্রভৃতি হারাইয়া বসিলাম। ব্রাহ্মণের আধিপত্য বজায় রাখিতে নিজেদের অল্প-সল্প যাহা কিছু কাজ কর্ম্ম, তাহাও বেশ নিজেদের মধ্যে বিলি বন্দোবস্তের গণ্ডী আঁকিয়া সীমাবদ্ধ করিয়া নিশ্চিন্ত হইয়া রহিলাম। তাই সায়েস্তা খাঁর সময় টাকায় ৮ মণ চাউল। ইহা দেশের ধনহীনতারই পরিচায়ক। পলাসীর যুদ্ধের পরের একটা কথা বলিতেছি। একটি পুরানো পুঁথির শেষ পৃষ্ঠায় দুর্গোৎসবের হিসাব পাওয়া গিয়াছে! আট আনায় একমণ দই, একমণ চাল আটআনা, সমস্ত ব্যাপার পঁচিশ টাকায় নির্ব্বাহ হইত। কামার হয়ত দা, কুড়াল, লাঙ্গলের ফা’ল প্রভৃতি তৈরি করিয়া দিয়াছে, গৃহস্থ তার দাম আট আনার ধান গোলা থেকে দিতে চাহিলেন। কামার কুলীর মজুরির ভয়ে অত ধান লইতে রাজি হইল না।

 আমরা তাঁতীর কাজ তাঁতীকে, কামারের কাজ কামারকে ও