পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

 হাওড়া ও শিয়ালদহ ষ্টেশনে গেলে দেখিতে পাওয়া যায় প্রতিদিন কত হাজার হাজার কেরাণী ডেলি প্যাসেঞ্জার রূপে সকাল সন্ধ্যা আসা যাওয়া করেন। ইঁহাদের কেহই ৩০।৪০ বা ৫০৲ টাকার অধিক বড় রোজগার করেন না। তন্মধ্যে ৫।৭৲ টাকা মাসিক টিকেট ক্রয় করিতেই ব্যয়িত হয়। এই তো রোজ্‌গার। ইহারই তাড়নায় সকালবেলা ৮ টার সময় নাকে মুখে কোন প্রকারে ভাত গুঁজিয়া হাজিরা দিতে হয়। কি শোচনীয় দৃশ্য!

 অনেকে বলেন, আপনি কেবল প্রশ্নই উত্থাপন করেন, তাহার সমাধানের এবং প্রতিকারের ব্যবস্থা করেন না। এই সমস্ত প্রশ্নের সমাধান নিজের চারিদিকে দৃষ্টিপাত করিলেই পাইবেন। এই যে এখানকার খেয়াঘাট ইহা হইতে কত আয় হইতে পারে? কিন্তু ইহাও খোট্টারা আসিয়া ক্রমে ক্রমে অধিকার করিয়াছে কেন? বাগেরহাট—খুলনা ও বসিরহাট অঞ্চলে একজন ১৬টা খেয়াঘাট জমা লইয়াছে। আমরা পারি না কেন? ডিষ্ট্রীক্টবোর্ডের কর্ত্তা তো আমরাই। প্রকাশ্য ডাকে এগুলো বিলি করা হয়, বিদেশীরা এসে সুবিধা করিয়া নেয়, আমরা পারি না কেন? একজন খোট্টা নিজে তার ঘাটে নৌকা বাওয়া, পয়সা আদায় করা ইত্যাদি সব নিজে তদারক করে, অপচয় হইবার কোন উপায় রাখেনা। আর আমরা পারি না, কেবল আমাদের একজন ১৫৲ টাকা দিয়া সরকার রাখিতে হয়, নতুবা দিনে দুইবার তাস খেলা, ঘণ্টা-কয়েক সুনিদ্রা, ইত্যাদির ব্যাঘাত হয়। ১৫৲ টাকার সর্‌কার নিজেকে ভাতে কাপড়ে বাঁচাইবার জন্য চুরি করিতে বাধ্য হয়। কাজেই ইজারা লইয়া আমাদের লাভ হয় না; কেননা আমরা বাবু।

 সমস্ত কলিকাতা সহর খুঁজিলে কয়টা বাঙ্গালী পানওয়ালা বাহির হয়? সবই তো খোট্টা। রোজ যখন গড়ের মাঠে বিকালে বেড়াইতে যাই