পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৬
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

একবার লাগিয়া যায় তখন ‘পশ্চিমে’ আনিবে ধান কাটাইবার ও মলাইবার জন্য। নিজেরা আর কিছুই করিবে না। তারা কি এতই ধনী? গিরিডি অঞ্চলে দেখিয়াছি নেহাৎ যখন ক্ষুধার তাড়না অসহ্য হইয়া উঠে তখন দেশী সাঁওতালরা কাজ করে। অন্য সময়, কাজ করে না কেন, জিজ্ঞাসা করিলে উত্তর দেয় “কাজ কর্ব্ব কেন?” উপোস কর্‌তে কি জানি না?”

 তারপর কলিকাতা সহরে কত ছুতোর মিস্ত্রি কাজ পাইতে পারে, কিন্তু চীনে আসিয়া অধিকার করিয়াছে। কেন না, দেশী মিস্ত্রিরা চোখের আড়াল হলেই ফাঁকি দিবে। তাদের উপর কোন কাজ দিয়া নির্ভর করা যায় না। কিন্তু একজন চীনে মিস্ত্রি কি প্রাণপাত করিয়া পরিশ্রম করে! পূর্ব্বে চীনেপট্টির খানিকটায় চীনেরা থাকিত। এখন বেণ্টিঙ্ক ষ্ট্রীট্‌ অঞ্চল ছাইয়া ফেলিয়াছে। কেন? এ দেশে কি মুচি পাওয়া যায় না? নিম্নশ্রেণী ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী আমাদের সকলেরই মধ্যে অকর্ম্মণ্যতা ও কুড়েমি। এই করিয়া দেশের প্রায় সকল বিভাগই বিদেশী দ্বারা বিজিত হইতেছে। কলিকাতা পটারী ওয়ার্কসের নিকট দু’এক বছর আগে একজন চীনা মিস্ত্রির সামান্য একখানি দোকান দেখিয়াছি, কিন্তু অধ্যবসায় ও সততা দ্বারা এখন সে দোকান একটি বিরাট কারবারে পরিণত হইয়াছে।

 অতএব এখন আমাদের কি করা কর্ত্তব্য? সহযোগ-বর্জ্জন আন্দোলন দেশের একটি কল্যাণ করিয়াছে। দেশের লোকের দৃষ্টি অন্তর্মুখী হইয়াছে। দেশের মা-বাপেরা বুঝিয়াছেন, চল্‌তি রকম লেখাপড়ার অসারতা। এতদিন এই শিক্ষা ছেলেকে দিবার জন্য হইতে হইয়াছে খরচান্ত। ছেলে গ্রাজুয়েট হইয়া কি পরিমাণ অর্থ রোজগার করিতেছেন তাহা তো আমরা সকলেই দেখিতে পাইতেছি। পাঠ্যাবস্থা কাটে ভাল। কিন্তু অনেকের