তবে ওকালতির দুর্ভোগ ভুগিতে হয় না। অনেক সময় প্রশ্ন হয় যে, কোথায় শিক্ষানবীশি করা যাইবে? গ্রামে গ্রামে গিয়া দেখিলে দেখিতে পাওয়া যায় অনেক সাহা প্রভৃতি ব্যবসায়ী শ্রেণীর লোক ব্যবসা করিয়া কৃতী হইতেছেন। ইঁহাদের নিকট গিয়া বিনা মাহিনায় নিজ হাতে কাজ শিখিতে গেলে অবশ্য ইঁহারা আপত্তি করিবেন না। শুনিয়া থাকি, মাড়োয়ারীরা নাকি বাঙালীদের ব্যবসাতে লইতে আপত্তি করেন। কিন্তু অনেক বাঙালী দেশে গ্রামে আছেন যাঁহারা চাউল, ডাল, কেরোসিন ইত্যাদির ব্যবসা করিয়া অর্থোপার্জ্জন করিতেছেন। ইঁহাদের নিকট যাইয়া চাকরের মত খাটিতে হইবে। তুচ্ছ আত্মসম্মানের মিথ্যা মোহে শিক্ষাকে বিড়ম্বিত করিলে চলিবে না।
অনেকে ব্যবসায় শিখিবেন বলিয়া School of Commerce ইত্যাদিতে ভর্ত্তি হইতে ব্যস্ত হইয়া উঠিয়াছেন। ব্লাক্বোর্ডে ও খড়িমাটির সাহায্যে ব্যবসা শিক্ষা হয় না। তূলো, পাট কোথায় জন্মে, Commercial History ও Geography ইত্যাদি না পড়িয়াও মাড়োয়ারী ও ভাটিয়াদের তাহা জানিতে ও ব্যবসা চালাইতে কোন কষ্ট হয় না। ইংরেজীতে হিসাব রাখা কিম্বা নির্ভূল পত্রলিখন-পদ্ধতি জানা কৃতকার্য্য হইবার পক্ষে একান্ত প্রয়োজন নয়।
ছেলে পরীক্ষায় কৃতকার্য্য না হইলে তাহাকে বৃথা চোখ রাঙাইবার কোন প্রয়োজন নাই। এখনো তার কোন “মিথ্যা আত্মসম্মান বোধ” (false sense of dignity) হয় নাই, তাহাকে কোন ছোট দোকান করিয়া দিন। কিম্বা কোন দোকানে বেচাকেনা শিখিতে দিন। “বাইরে কোঁচার পত্তন ভিতরে ছুঁচোর কীর্তন” করিয়া কি হইবে?
যাহা হউক, দেশের হাওয়া ফিরিয়াছে—ইহা খুব শুভলক্ষণ সন্দেহ নাই। আজ জীবনসংগ্রামের মহা-আবর্ত্তে ধীর ভাবে অকুতোভয় হইয়া