৸৹
বক্তৃতায় তাঁহার হৃদয়ে দেশাত্মবোধ জাগিয়া উঠে, এবং তিনি ভারতে রাজনৈতিক সংস্কারের আবশ্যকতা হৃদয়ঙ্গম করেন। এই সময়ে সুরেন্দ্রনাথ মেট্রপলিটান কলেজে ইংরাজী সাহিত্যের অধ্যাপনায় নিযুক্ত ছিলেন। সুরেন্দ্রনাথের বক্তৃতায় তিনি এরূপ মুগ্ধ হইয়াছিলেন যে, মাত্র তাঁহার নিকট পড়িবার সুযোগ হইবে বলিয়াই তিনি মেট্রপলিটান কলেজে প্রবেশ করেন। এই কলেজে পড়িবার সময় প্রফুল্লচন্দ্র প্রেসিডেন্সি কলেজে প্রবেশ করিয়া সুবিখ্যাত অধ্যাপক স্যার জন এলিয়ট ও স্যার আলেকজাণ্ডার পেডলার সাহেবের নিকট যথাক্রমে পদার্থবিজ্ঞান (Physics) ও রসায়নশাস্ত্র অধ্যয়ন করিতে আরম্ভ করেন।
প্রফুল্লচন্দ্র ১৮৮০ খৃষ্টাব্দে দ্বিতীয় বিভাগে এফ, এ, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরীক্ষার কয়েকমাস পূর্ব্বে তিনি বিশেষ অসুস্থ হইয়া পড়েন। হরিশ্চন্দ্রের ইচ্ছা ছিল, তিনি পুত্রগণকে বিলাত পাঠাইয়া তথায় সকলকে উচ্চ শিক্ষা দিবেন। কিন্তু ক্রমশ: তাঁহার অবস্থা হীন হইতে থাকায়, তিনি স্বীয় সংকল্প কার্য্যে পরিণত করিতে না পারিয়া বিশেষ দুঃখিত হইয়া পড়েন। প্রফুল্লচন্দ্র পিতার মনোভাব অনেকটা অবগত ছিলেন, তাই ধীরে ধীরে গিলক্রাইষ্ট (Gilchrist) বৃত্তি পরীক্ষার জন্য আপনাকে প্রস্তুত করিতে থাকেন। ১৮৮২ খৃঃ অন্ধে তিনি উক্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া বৃত্তিলাভ করেন।
১৮৮২ খৃঃ অব্দে বি, এ, পরীক্ষা দেওয়ার পূর্ব্বেই প্রফুল্লচন্দ্র বিলাত যাত্রা করেন। বাল্যকাল হইতেই ইতিহাস ও ইংরাজী সাহিত্যের উপর তাঁহার খুব ঝোঁক ছিল। তিনি যখন বুঝিতে পারিলেন, ভারতের স্থায়ী মঙ্গল করিতে হইলে যুরোপীয় ভাষা ও সাহিত্যের দ্বারা তাহা সম্ভাবিত নহে, পরন্তু যুরোপীয় বিজ্ঞানের উপরই ভারতের স্থায়ী উন্নতি