পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

মানব-বিজ্ঞান সম্বন্ধীয় যে সকল সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছেন তাহা আমাদের অনেকের ভাল না লাগিতে পারে, কিন্তু চন্দ মহাশয়ের গবেষণায় অন্ততঃ ইহা প্রমাণ হয় যে বিভিন্ন জাতি এবং উপজাতিগণ মূলতঃ অভিন্ন! এইত গেল ব্রাহ্মণগণের কথা। কায়স্থগণের সম্বন্ধে ত প্রবাদই প্রচলিত রহিয়াছে যে “জাত হারালে কায়স্থ”। কুলীন এবং মৌলিক ভিন্ন তাহাদের মধ্যে ৭২ উপবিভাগ আছে। ইহাদের মধ্যে যদি কোনও যুবক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধি লাভ করে, কিম্বা যথেষ্ট অর্থ সঞ্চয় করিতে গারে, তাহা হইলে শুদ্ধ কুলীন কায়স্থগণের মধ্যে তাহাকে জামাতা করিবার জন্য হুড়াহুড়ি পড়িয়া যায়; এইরূপে অনবরত কতলোক বাহাত্তরে ঘর হইতে মৌলিক শ্রেণীতে প্রমোশন পাইতেছে। আবার মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মত একজন লব্ধপ্রতিষ্ঠ গবেষণাকারীর মতে, মৌলিকগণ অধিকাংশই প্রাচীনকালে বৌদ্ধ ছিলেন।

 রাসায়নিক বিশ্লেষণ দ্বারা যেরূপ ঘিয়ের ভেজাল কতখানি জানিতে পারা যায়, দুঃখের বিষয়, সেইরূপ রাসায়নিক কোন বিশ্লেষণ দ্বারা ব্রাহ্মণ ও কায়স্থের রক্তে কি পরিমাণ ভেজাল আসিয়াছে তাহা জানিবার উপায় নাই। যতদূর জানিতে পারা যায় তাহাতে বল্লাল সেনের সময় হইতেই জাতি সম্বন্ধে এখনকার নিয়মগুলির সৃষ্টি হয়। তৎপরে রঘুনন্দন তাহাতে তাঁহার নিজের কিছু কৃতিত্ব ফলাইয়াছেন। তিনি কায়স্থদিগকে “সচ্ছূদ্র” অর্থাৎ উচ্চদরের শূদ্র এই আখ্যা দিয়া কায়স্থদিগের প্রতি যথেষ্ট সম্মান দেখাইয়াছেন। পাল সাম্রাজ্যের উত্তরাংশে তিব্বত হইতে একদল অসভ্য লোক আসিয়া একটি রাজ্য স্থাপন করিয়া বসিয়াছিল, এই রাজ্যটি অর্দ্ধ শতাব্দী ধরিয়া বর্ত্তমান থাকিবার পর মহীপাল কর্ত্তৃক বিধ্বস্ত হয়। এই সমস্ত তিব্বত-হইতে-আগত