নিম্নলিখিত স্ত্রীলোকই পর পর শ্রেষ্ঠ হয়। শূদ্রাই কেবল শূদ্রের ভার্য্যা হইবে, শূদ্রা ও বৈশ্য, বৈশ্যের বিবাহযোগ্যা। এবং শূদ্রা, বৈশ্যা, ক্ষত্রিয়া এবং ব্রাহ্মণী—ব্রাহ্মণের বিবাহযোগ্যা হইবে।”
“বেশ্যাগর্ভে বশিষ্ঠ, দাসীগর্ভে নারদমুনি, শূদ্রাগর্ভে দুই পিতার ঔরসে ভরদ্বাজ মুনি, ধীবর কন্যাতে বেদব্যাস, ক্ষত্রিয়াগর্ভে বিশ্বামিত্র জন্ম গ্রহণ করিয়াও ব্রাহ্মণ হইলেন কিরূপে? আবার ব্যাসদেবের ঔরসে জন্মলাভ করিয়াও ধৃতরাষ্ট্র, পাণ্ডু প্রভৃতি ক্ষত্রিয় হইলেন কেমন করিয়া?”
“ঐতরেয় ব্রাহ্মণের ২।১৯ শ্লোকে কবয ঋষির কথা উল্লেখ আছে। তিনি একজন দাসীপুত্র সুতরাং শূদ্র। কিন্তু তিনি ঋগ্বেদ সংহিতার দশম মণ্ডলের অন্তর্গত ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩, ও ৩৪ সূত্র রচনা করেন। কক্ষীবান ঋষি ঋগ্বেদ সংহিতার কতকগুলি সূক্ত রচনা করেন, তিনিও দাসীপুত্র, কারণ—‘কক্ষীবন্তং য ঔশিজঃ।’ ১।১৮।১ এই উশিজ দাসবর্ণীয়া ছিলেন। আবার বিশ্ববারা, রোমনা, যমী, উর্ব্বশী প্রভৃতি স্ত্রীলোকেরাও বেদ মন্ত্রের রচয়িত্রী বলিয়া উল্লিখিত হইয়াছেন। ইঁহারা সকলে ঋগ্বেদ মন্ত্র রচনা করেন।”
ভাণ্ডারকরের ন্যায় প্রসিদ্ধ পণ্ডিতগণ বলেন যে, গুপ্তবংশের রাজ্যকালে যখন ব্রাহ্মণ্য ধর্ম্মের পুনরভ্যুদয় হয়, তখন পুরোহিতগণের প্রাধান্য স্থাপন করিবার জন্য পুরাণ এবং অন্যান্য শাস্ত্রে অনেক অংশ প্রক্ষিপ্ত হইয়াছিল।
এই সমস্ত বিষয় আলোচনা করিলে দেখা যায় উচ্চ জাতিগণ যে বংশমর্য্যাদার দাবী করেন তাহার মূলে ঐতিহাসিক প্রমাণ অল্পই আছে। এইবার আমি আপনাদের আর একটি বিষয় আলোচনা করিতে অনুরোধ করিতেছি। কি করিলে আমাদের সমাজের উন্নতি হইবে তাহা দেখিতে হইবে। অদৃষ্টক্রমে উচ্চবংশে জন্মিয়াছেন বলিয়া মুষ্টিমেয় কয়েকজন