৸ノo
নির্ভর করিতেছে, তখন এডিনবরায় প্রবেশ করিয়া পাঠ্য নির্ব্বাচন করিতে তাঁহার ক্ষণকাল বিলম্ব হইল না; তাঁহার চির ঈপ্সিত ইতিহাস ও সাহিত্যের চর্চা পরিত্যাগ করিয়া তিনি রসায়নশাস্ত্র অধ্যয়নে আত্মনিয়োগ করিলেন।
প্রফুল্লচন্দ্রের সৌভাগ্যক্রমে তিনি এডিনবরায় প্রবেশ করিয়া তৎকালীন যুরোপ-প্রসিদ্ধ দুই বিখ্যাত বৈজ্ঞানিকের পাদমূলে উপবেশন করিয়া শিক্ষালাভের সুযোগ পাইয়াছিলেন। সুবিখ্যাত পি, জি, টেইট (P. G. Tait) সাহেব পদার্থ বিজ্ঞানের এযং এ, সি, ব্রাউন (Alexander Crum Brown) রসায়নশাস্ত্রের অধ্যাপনা করিতেন। ইঁহারা উভয়েই প্রফুল্লচন্দ্রের প্রতি সদয় ব্যবহার করিতেন; ইঁহাদেরই শিক্ষাগুণে অতি অল্প দিনের মধ্যেই প্রফুল্লচন্দ্র রসায়নশাস্ত্রের দিকে আকৃষ্ট হইতে থাকেন। অতি শীঘ্রই একজন বিজ্ঞানানুরক্ত মেধাবী ছাত্র বলিয়া তাঁহার খ্যাতি সর্ব্বত্র বিস্তৃত হইয়া পড়ে, এবং তিনি সকলের প্রিয় হইয়া উঠেন।
কলেজের নির্দ্দিষ্ট কালের পর তিনি খুব অল্প সময়ই পাঠে ব্যয় করিতেন। কিন্তু যেটুকু সময় পাঠে নিয়োগ করিতেন, তাহা গভীর মনোযোগের সহিতই করিতেন। নিয়মিত অধ্যয়নের ফলে প্রফুল্লচন্দ্র ১৮৮৫ খৃষ্টাব্দে বি-এস্-সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৮৮৭ খৃষ্টাব্দে ডি-এস্-সি ডিগ্রী লাভ করেন। তাঁহার রচিত প্রবন্ধ সর্ব্বোৎকৃষ্ট বিবেচিত হওয়ায় তিনি ‘Hope Prize’ নামক সম্মানজনক পুরস্কারও লাভ করিয়াছিলেন। ঐ পুরস্কারের মূল্য পঞ্চাশ পাউণ্ড, অর্থাৎ তখনকার দিনে প্রায় ছয়শত টাকা ছিল। ঐ বৃত্তিলন্ধ অর্থে তিনি আরও ছয় মাসকাল এডিনবরায় অবস্থিতি করিয়া তাঁহার আরব্ধ রাসায়নিক গবেষণা শেষ করিতে পারিয়াছিলেন।